হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মামলায় এজাহারভুক্ত আসামী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা ফরিদ আহমেদ (৫৮) অবশেষে গ্রেফতার হয়েছেন। তিনি ৭নং বড়ইউড়ি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত চেয়ারম্যান।
৩ জুলাই (বৃহস্পতিবার) দুপুর আড়াইটার দিকে বানিয়াচং থানার ওসি মোস্তফা কামালের নেতৃত্বে একদল পুলিশ তার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন বানিয়াচং থানার বর্তমান ওসি গোলাম মোস্তফা।
পুলিশ জানায়, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় ফরিদ আহমেদ পলাতক ছিলেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয় এবং পরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট বানিয়াচংয়ে আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার সঙ্গে পুলিশের ভয়াবহ সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় প্রাণ হারান ১০ জন, যার মধ্যে ৮ জন পুলিশের গুলিতে এবং ২ জন আন্দোলনকারীদের হাতে নিহত হন—একজন সাংবাদিক ও এক পুলিশ সদস্য। আহত হন শতাধিক মানুষ। আন্দোলনের সময় বানিয়াচং থানা ভবনে আগুন ধরিয়ে অস্ত্র, গোলাবারুদ ও নথিপত্র ধ্বংস করা হয়।
এই ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে একটি মামলা এবং এক শিশুর পিতার পক্ষ থেকে আরেকটি হত্যা মামলা দায়ের হয়। পরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালসহ বিভিন্ন আদালতে একাধিক মামলা হয়, যাতে সাবেক এমপি, ইউপি চেয়ারম্যানসহ বহু আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীকে আসামী করা হয়। অনেকেই এখনো কারাগারে রয়েছেন।
চেয়ারম্যান ফরিদ আহমেদ গ্রেফতারের পর স্থানীয়ভাবে প্রশ্ন উঠেছে—তিনি দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পরও কীভাবে এলাকায় থেকে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। তার পেছনে কারা সেল্টার দিয়েছেন, তা নিয়েও রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে আলোচনা-সমালোচনা।