সারাদেশে দরগাহ, মাজার ও খানকাহ শরীফে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, মানুষ হত্যা ও অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে হবিগঞ্জে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। পরে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নিমতলায় বাংলাদেশ দরগাহ-মাজার ঐক্য পরিষদ ও বিশ্ব সূফী সংস্থার আয়োজনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
এতে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ দরগাহ-মাজার ঐক্য পরিষদ হবিগঞ্জ জেলা আহবায়ক ও মুড়ারবন্দ দরবার শরীফের খাদেম সৈয়দ মুরাদ আহাম্মদ।
মানববন্ধনে জেলার বিভিন্ন দরবার, মাজার ও খানকাহ শরীফের উত্তরসূরী বংশধর, খাদেম, আশেকান ও ভক্তবৃন্দসহ হাজারো মানুষ অংশগ্রহণ করেন। বক্তারা বলেন, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট থেকে উগ্র মৌলবাদী জঙ্গিরা সারাদেশে একের পর এক হামলা চালিয়ে আসছে। এরই মধ্যে বহু দরবার-মাজার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, ভক্ত-আশেকানদের হত্যা করা হয়েছে, এমনকি আগুন দিয়ে লাশ পুড়িয়ে ফেলার মতো নৃশংস ঘটনাও ঘটেছে।
তারা ক্ষতিগ্রস্ত দরবার-মাজারগুলোর সংস্কার, দুষ্কৃতকারীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। বিশেষ করে গত ৫ সেপ্টেম্বর রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে “নূরাল পাগলা” খ্যাত সুফি সাধক মো. নূরুল হকের লাশ কবর থেকে উত্তোলন করে পেট্রোল ঢেলে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া এবং তাঁর দুই ভক্তকে হত্যা করে গুম করে ফেলার ঘটনায় দেশ-বিদেশে মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে গভীর আঘাত লেগেছে বলে উল্লেখ করেন বক্তারা।
মানববন্ধনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন রিচি মেহেরাবাদ দরবার শরীফের মোতাওয়াল্লী পীরজাদা সৈয়দ শামসুদ্দিন আহমেদ এমরান (পাগলা সাহেব)। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফকিরাবাদ সাহেব বাড়ীর এপিপি এডভোকেট সৈয়দ জাদিল উদ্দিন আহমেদ, কণ্ঠশিল্পী সৈয়দ আশিকুর রহমান আশিক, সাংবাদিক সৈয়দ আখলাক উদ্দিন মনসুর, এডভোকেট আজিজুর রহমান আহমেদ, সৈয়দ মাসুদুল হোসাইন, সৈয়দ আমিন, সাবেক চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম ফটিকসহ আরও অনেকে।
সভা পরিচালনা করেন সাংবাদিক মাওলানা মো. নঈমী ও জেলা নাগরিক কমিটির নেতা চৌধুরী ফরহাদ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ দরগাহ-মাজার ঐক্য পরিষদের সদস্য সচিব লিটন শাহ ফকির।
বক্তব্য শেষে দোয়া পরিচালনা করেন প্রধান অতিথি পীরজাদা সৈয়দ শামসুদ্দিন আহমেদ এমরান। পরবর্তীতে একটি বিক্ষোভ র্যালি বের হয়ে শহর প্রদক্ষিণ করে।
শেষে সংগঠনের পক্ষ থেকে সারাদেশে ঘটে যাওয়া নৃশংস হামলার বিচার, ক্ষতিগ্রস্ত স্থানগুলোতে সংস্কার ও ক্ষতিপূরণ এবং ভবিষ্যতে এমন ঘটনা প্রতিরোধে প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়ে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।