হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার নোয়াপাড়া চা বাগানে প্রায় দুই বছর ধরে গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এতে চা কারখানার উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে। গ্যাস না থাকায় চা পাতা শুকানো সম্ভব হচ্ছে না। ফলে প্রতিবছরই বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছে বাগান কর্তৃপক্ষ। এই পরিস্থিতিতে প্রায় দুই হাজার শ্রমিক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর জীবন-জীবিকা চরম সংকটে পড়েছে।
শ্রমিকরা জানান,“আমরা নিম্ন আয়ের মানুষ। বাগানে কাজ করেই পরিবারের ভরণ-পোষণ করি। দুই বছর ধরে গ্যাস সংযোগ বন্ধ থাকায় আমাদের জীবনযাপন কঠিন হয়ে পড়েছে। এখন বকেয়া বিল পরিশোধ করা হলেও সংযোগ দেওয়া হয়নি। সংযোগ না পেলে আমরা বাধ্য হয়ে আন্দোলনে নামব।”
তারা আরও বলেন, “গ্যাস না থাকায় একটি শিল্প ধ্বংসের পথে। যদি বাগান স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে প্রায় দুই হাজার শ্রমিক ও তাদের পরিবারের সদস্যরা মারাত্মক বিপদের মুখে পড়বে।”
নোয়াপাড়া চা বাগান শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি কমেট নায়েক বলেন, “গ্যাস সংযোগ দ্রুত পুনঃস্থাপন না হলে শ্রমিকরা বড় ধরনের বিপর্যয়ের মুখে পড়বে। দীর্ঘ সময় কারখানা বন্ধ থাকায় যন্ত্রপাতি নষ্ট হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করেও কোনো সমাধান পাওয়া যায়নি। শ্রমিকরা শুধু তাদের জীবিকা নয়, বাগানের স্বাভাবিক উৎপাদনও বজায় রাখতে চান।”
ইউনিয়নের সেক্রেটারি মনি বাউড়ি বলেন, “গ্যাস সংযোগ না থাকায় শুধু শ্রমিকরাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন না, পুরো বাগানের উৎপাদন বন্ধ হয়ে আছে। দীর্ঘ সময়ের এই অচলাবস্থা চা শিল্প ও স্থানীয় অর্থনীতির জন্যও উদ্বেগের বিষয়। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে শ্রমিকদের জীবন-জীবিকা মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে পড়বে।”
সাবেক ইউপি সদস্য শ্যামল বণিক জানান, “শ্রমিক অসন্তোষ দিন দিন বাড়ছে। যদি দ্রুত গ্যাস সংযোগ না দেওয়া হয়, শ্রমিকরা বাধ্য হয়ে আন্দোলনে নামবেন। গ্যাস সংযোগ পুনঃস্থাপন ছাড়া চা শিল্পের স্বাভাবিক কার্যক্রম ও শ্রমিকদের জীবনমান রক্ষা সম্ভব নয়। দীর্ঘদিন কারখানা বন্ধ থাকায় যন্ত্রপাতি নষ্ট হচ্ছে, চা উৎপাদনের চক্রও ব্যাহত হচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “এই সমস্যার সমাধান না হলে শুধু শ্রমিকরাই নয়, পুরো চা শিল্প ও স্থানীয় অর্থনীতিই বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে। তাই নোয়াপাড়া চা বাগানের গ্যাস সংযোগ দ্রুত পুনঃস্থাপন অত্যন্ত জরুরি। এতে শ্রমিকরা পুনরায় কাজে ফিরতে পারবেন এবং উৎপাদন স্বাভাবিক হবে।”
জালালাবাদ গ্যাস অ্যান্ড টি ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম লিমিটেড, হবিগঞ্জের শাহজিবাজার কার্যালয়ের ম্যানেজার হুসাইন মো. জুনায়েদ বলেন, “নোয়াপাড়া চা বাগানের সব বকেয়া পরিশোধ করা হয়েছে। এখন ঢাকার অনুমোদনের অপেক্ষায় আছি। অনুমোদন পাওয়া মাত্রই গ্যাস সংযোগ পুনঃস্থাপন করা হবে।”


