হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ ঐতিহ্যবাহী রেলওয়ে জংশন যেন বিভিন্ন অপরাধীদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে । চোর, ছিনতাইকারী , অজ্ঞান পার্টি , মলম পার্টি সহ নানা অপরাধের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে এই রেল স্টেশন জংশন টি । মনে হয় তাদের জমিদারী সম্পত্তি হিসেবে বাড়ি ঘর তৈরি করেছে রেল স্টেশন । চরম আতঙ্ক ও নিরাপত্তা হীনতার ভোগছে যাত্রী সাধারণ । বিভিন্ন অপরাধীর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার কেউ নেই ? মাঝে মাঝে শুনা যায় ট্রেন যাত্রীদের মোবাইল ফোন , মানিব্যাগ , স্বর্ণের চেইন , মূল্যবান জিনিস পত্র ছিনতাই হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া যায় । স্টেশন এলাকায় অপরাধীরা দিবারাত্র বেপরোয়া হয়ে উঠেছে । শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ে জংশন একটি গুরুত্বপূর্ণ জংশন ।
ভৌগোলিক অবস্থানের দিক থেকে তৎকালীন বৃটিশ সরকার আমল থেকেই এ জংশনের অনেক গুরুত্ব রয়েছে । ফলে এ জংশনের সুনাম দিন দিন নষ্ট করে ফেলছে । কম খরচে আরাম দায়ক ও নিরাপদ ভ্রমনের জন্য যাত্রীরা শায়েস্তাগঞ্জ থেকে দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ট্রেনে যাতায়াত করে থাকে ।
প্রতিদিন শায়েস্তাগঞ্জ থেকে বিভিন্ন স্থানে প্রায় ১০ – ১৫ হাজার যাত্রী ভ্রমণ করে থাকে । যাত্রীদের ভ্রমণের জন্য ঢাকা – সিলেট রুটে ৫ টি আন্তঃনগর ও দুটি মেইন ট্রেন চলাচল করে। আর এ সুবাদে চোর, ছিনতাইকারী , অজ্ঞান পার্টি , মলম পার্টি ট্রেনে উঠা ও নামার সময় সুযোগ বুঝে এমন ভাবে মোবাইল ফোন , মানিব্যাগ , স্বর্ণের চেইন , জিনিসপত্র ছিনতাই নিয়ে যাচ্ছে । কিন্তু ছিনতাই হওয়ার সময় অনেক যাত্রী কোনো টের পায় না । ছিনতাই হওয়ার পর অনেক যাত্রী ট্রেনে উঠে অনেক মহাবিপদে পড়তে হয় । আবার কেউ অজ্ঞান হয়ে পরে থাকে ।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা ও ট্রেনের যাত্রীরা জানান , স্টেশনের পাশে অনেক ভাসমান রয়েছে কিন্তু রেলওয়ে জায়গায় বস্তি দখল করে বস বাস করছে এবং রেলওয়ে অনেক পরিত্যক্ত বাসা দখল করে বিভিন্ন অপরাধীকে ভাড়া দিয়ে আসছে । দীর্ঘ দিন ধরে শায়েস্তাগঞ্জ ঐতিহ্যবাহী রেলওয়ে জংশন স্টেশনে দিবারাত্রি চোর , ছিনতাইকারী , অজ্ঞান পার্টি , মলম পার্টি , মাদকসেবী সহ নানা অপরাধ বেড়েছে । রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ মাঝে মাঝে অপরাধীকে ধরে নিয়ে গেলে ও বিভিন্ন দিক থেকে চাপ আসে মোবাইলে বা বিভিন্ন ভাবে হুমকি । নিরুপায় হয়ে অনেক অপরাধীকে ছেড়ে দিতে হচ্ছে ।
উপজেলা কর্মরত বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনের প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া ও লোকজন জানাজানি হলে অপরাধী আটক হলে পুলিশ কাছ থেকে তথ্য পাওয়া যায় ।
গত বৃহস্পতিবার (১৯ জুন ), বিকেলে শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ে ষ্টেশন থেকে সন্দেহ জনক হিসেবে এক নারী চোরকে আটক করে রেল পুলিশ । এসময় আটককৃত নারী কাছ থেকে একটি চোরাই মোবাইল উদ্ধার করা হয় ।
শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা কর্মরত সাংবাদিক সংগঠনের কোনো সদস্য না গিয়ে কে বা কারা কতিপয় দুই জন নামধারী সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে পুলিশের সাথে রফাদফা করে মহিলাকে ছেড়ে আনার চেষ্টা চালায় । পুলিশ নারীকে জিজ্ঞাসা করে বিভিন্ন তথ্য নিয়ে মুসলেকা দিয়ে ছেড়ে দেয় । প্রতিদিন ছিনতাইকারী যুবক , কিশোর , টোকাই , মাদকসেবি ও নারী মহিলা উৎপেতে বসে থাকে । সুযোগ পেলেই ট্রেনে উঠার সময় বা নামার সময় মোবাইল ফোন , মানিব্যাগ , স্বর্ণের চেইন , জিনিসপত্র হাতিয়ে নেয় । বেশির ভাগ ছিনতাই হয় আন্তঃনগর ট্রেনে । অপর দিকে স্টেশন থেকে ট্রেন ছেড়ে দেওয়ার সময় জানালা সামন থেকে লাফ দিয়ে মোবাইল বা স্বর্ণের চেইন ছিনিয়ে নিয়ে দৌড় দিয়ে পালিয়ে যায় । ছিনতাইকারী মোবাইল নিতে পারলে মোবাইল সার্ভিসিং দোকানে বা দূরদূরান্ত নিয়ে বিক্রি করে দেয় । ছিনতাই কারীরা কোনো থানায় বা পুলিশ ফাঁড়িতে আটক হলেই বিভিন্ন কৌশলে তাদের নিজস্ব কিছু সিন্ডিকেট চক্র ছেড়ে নিয়ে আসে বলে অভিযোগ রয়েছে ।
শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ে জংশনে ছিনতাইকারী ও বিভিন্ন অপরাধ প্রতিরোধ করার জন্য জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের প্রতি হস্তক্ষেপ কামনা করছেন ট্রেন যাত্রী সহ জেলা বাসী ।


