১৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
৩০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
সন্ধ্যা ৭:৫৬

জনপ্রিয় ৫ সংবাদ

আরো কিছু সংবাদ

শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভার মেয়র প্রার্থী মোঃ সারোয়ার আলম শাকিলের মনোনয়নপত্র জমা

সৈয়দ আখলাক উদ্দিন মনসুরঃ হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভা স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজ সেবক দানবীর মোঃ সারোয়ার আলম শাকিল মনোনয়নপত্র জেলা নির্বাচন অফিসার ও রিটার্নিং অফিসার মোহাম্মদ সাদেকুল ইসলাম এর হাতে তুলে জমা দেন।

আজ মঙ্গলবার (১ ডিসেম্বর) সকাল সোয়া ১১ টায় মোঃ সারোয়ার আলম শাকিলের সমর্থককারীদের সাথে নিয়ে শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়ে যায় এবং তাদের মধ্যে দেখা দেয় আনন্দের বন্যা।

এই সময় শাকিল সমর্থক কারীদের উদ্যেশ্যে বলেন, তিনি কোন রাজনৈতিক দলের কর্মী নন। নেই কোন পদ পদবী কিন্তু তিনি বর্তমান ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগ সমর্থন করেন। তার ভাল লাগে বঙ্গবন্ধুর নীতি আদর্শ। তাই তিনি দূর্নীতি, মাদক, টেন্ডারবাজিমুক্ত, পৌরসভা বিনির্মাণে মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন।

এ পৌরসভার সাধারণ নির্বাচন ২৮ ডিসেম্বর ইভিএম মাধ্যমে ভোট গ্রহণ করা হবে। তাঁর পিতা ছিলেন এম এ মোক্তাদির মুকুল প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী এবং শায়েস্তাগঞ্জ ও শ্রীমঙ্গলে অত্যন্ত সুনামের সাথে ব্যবসা পরিচালনা করে গেছেন।

১৯৭৯ সালে শায়েস্তাগঞ্জ প্রেসক্লাব স্থাপনে তার পিতা প্রথম অনুদান হিসেবে প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সৈয়দ আশরাফ উদ্দিন মামুন ও সাধারণ সম্পাদক শাহ মোঃ হুমায়ুন কবীর এর সময় টিন প্রদান করেন। সে হিসেবে তাকে একজন সাংবাদিক বান্ধব ব্যক্তি ও বলা যায়।

জীবদ্দশায় তিনি বিভিন্ন সমাজিক কর্মকান্ডে বিশেষ অবদান রাখেন। ২০০৮ সালে ২৩ ডিসেম্বর শাকিলের পিতা মৃত্যু বরণ করেন। পিতার পথ অনুসরণ করে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী মোঃ সারোয়ার আলম শাকিল হবিগঞ্জ শায়েস্তাগঞ্জ ও শ্রীমঙ্গল এলাকার একজন প্রতিষ্ঠিত শিল্পপতি ব্যবসায়ী ও সমাজ সেবক দানবীর হিসেবে সুনামের সাথে পরিচালনা করেন।

শাকিল এই প্রথমবারের মতো পৌরসভা মেয়র পদে নির্বাচনে অংশ নেন। তিনি চান পৌরসভার পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে কাজ করতে শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভার যে এলাকায় ভোটার কম সে এলাকায় উন্নয়ন হয়েছে কম। এটি তিনির অত্যন্ত বেদনাদায়ক। পৌরবাসীর সমর্থনে তিনি মেয়র নির্বাচিত হলে পৌর এলাকার অন্ত্যত ১ হাজার ৫শ পরিবারকে স্বাবলম্বী করার চেষ্টা করবেন। যাতে ওই পরিবার গুলোকে পেছনে ফিরে তাকাতে না হয় এবং কাহারো কাছে হাত পাততে না হয়। ‘‘জয় পরাজয় বড় কথানয়, পৌরবাসীর সেবা করা বড় কথা’’।

ব্যক্তিগত জীবনে তিনি দুই কন্যার সন্তানের জনক। তার মাতা রওশন আরা ছিলেন একজন ধার্মিক ও সহজ সরল সাদা মনের নারী। তার স্ত্রী শায়েস্তাগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের ইংরেজী প্রভাষক। তিনি পিতার আদর্শে যার পথ চলা শুরু মানুষের দুর্দিনে বসে থাকতে পারেন না। এদিকে কোভিড-১৯ মহামারির সময় অসহায়দেয় সহযোগীতায় তিনি সাহায্যের হাত প্রসারিত করেছেন।

তিনি আরো বলেন, ন্যায্য মূল্য নিত্য প্রয়োজনীয় পেঁয়াজ, লবণ বিক্রি করেছেন অসহায়দের মাঝে। করোনাকালীন সময়ে অন্তত ১৫ দিন পৌরসভায় বিভিন্ন ওয়ার্ডে অসহায়দের ঘরে ঘরে উপহার সামগ্রী পৌছে দিয়েছেন।

ঈদের সময় ঈদ সামগ্রী বিতরণ করেন। এছাড়া দূর্গাপূজা উপলক্ষ্যে প্রত্যেক পূজা মন্ডপে অসহায়দের মাঝে বস্ত্র বিতরণ করেন। পৌর এলাকায় সামাজিক সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে সাধ্য অনুযায়ী চেষ্টা করেন সহযোগীতা করার। তিনি একটি আধুনিক পরিচ্ছন্ন পৌরসভা গড়ে তুলতে ঘোষণা করেছেন নির্বাচনী ইশতেহার।

১) শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভার মধ্যে আধুনিক সুবিধা সম্প্রসারণ ও বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করা হবে।

২) তরুণ যুব সমাজের পাশে দাঁড়ানো ও দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তরিত করে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে।

৩) দূর্নীতির ব্যাপারে কঠোর নীতি প্রণয়ন করা হবে এবং তিনি কখনোই দূর্নীতি প্রশ্রয় দিবে না।

৪) বাজারের দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ব্যবস্থা করা হবে।

৫) বাজারের ব্যবসায়ীদের ও ক্রেতাদের সুবিধার্থে টয়লেটসহ গোসলখানার ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে।

৬) সব ধরনের উন্নয়ন প্রজেক্ট মান সম্মদ বাস্তবায়ন ও পৌরসভার প্রত্যের ওয়ার্ডের পাড়া মহল্লায় জনগণের চলাচলের সুবিধার জন্য অলিগলির পাকা রাস্তা ও পানি নিষ্কাশানের জন্য পাকা ড্রেন ও কালবার্ট এর ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে।

৭) পৌরসভার সর্বস্তরের শিক্ষার মান বৃদ্ধিকল্পে পৌরসভার সকল শিক্ষাঙ্গনের মান উন্নয়ন করা হবে।

৮। পৌরবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রত্যেক ওয়ার্ডের পয়েন্টে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা স্থাপন এবং গণতন্ত্র ও আইনের শাসন সুদৃঢ় করা হবে। যাহা কোন চুরি ডাকাতি থেকে বিরত থাকবে।

৯) আধুনিক কৃষি ব্যবস্থা ও কৃষকের ফসলের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করা হবে।

১০) সরকারি ভাতা যোগ্য সকলের ভাতা প্রাপ্তি নিশ্চিত করা হবে।

১১) পৌরসভা মেয়রের ভাতা ও গাড়ির তেল খরচের বরাদ্দের টাকা পৌরসভার দরিদ্রদের মাঝে বিতরণ করা হবে।

১২) পৌরকর সকারী বিধি মোতাবেক সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে। কারও উপর ভৌতিক কর প্রয়োগ করা হবে না। যেহেতু কর আদায়ের সাথে নগরের উন্নয়ন জড়িত। তাই ব্যবসায়ী ও প্রত্যেক ওয়ার্ডের মুরুব্বীয়ানদের সাথে আলোচনা করে কর ধার্য্য করা হবে।

১৩) পৌরসভার প্রত্যেক রাস্তায় স্টিক লাইটের ব্যবস্থা এবং জনগনের বাসা বাড়ির সাথে ডাস্টবিনের ব্যবস্থা করা হবে।

১৪) অনেক স্থানে বাড়ি থেকে রাস্তায় বের হওয়ার পথ না থাকায় খালের উপর দিয়ে বাশে সাকু দিয়ে পার হচ্ছে, সেই রাস্তা গুলোর উপর কালবার্ট দিয়ে ব্রিজ নির্মাণ করা হবে।

১৫) পৌরসভা ১৯৯৮ সালে গঠিত হলেও এখন পর্যন্ত কোন নিজস্ব ভবন নেই, একটি নিজস্ব ভবনের ব্যবস্থা করা হবে।

১৬) পৌরসভায় শিশু কিশোরদের জন্য একটি আধুনিক পরিবেশ পার্ক করা হবে।

১৭) একটি পৌর ঈদগাহ ও একটি শ্বশানঘাট প্রতিষ্ঠা করা হবে।

১৮) যে ওয়ার্ডের মহল্লায় শিশুদের শিক্ষা গ্রহণের জন্য প্রাইমারী স্কুল নেই, সেখানে প্রাইমারী স্কুল করার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

১৯) একটি পৌর অডিটোরিয়াম নির্মাণ করা হবে।

২০) গাড়ির যানজট নিরসন সহ গাড়ির নির্দিষ্ট স্ট্যান্ড করা হবে। উপজেলায় সরকারি হাসপাতাল নির্মাণ না করা হলে তিনি নিজে ব্যক্তিগত উদ্যোগে একটি হাসপাতাল নির্মাণ করবেন এবং সকল রোগের জন্য ডাক্তার এর ব্যবস্থা করবেন। তিনি একটি স্বপ্নের পৌরসভা বিনির্মানে প্রত্যয়ী, সুন্দর, সচেতন জবাবদিহিতা মূলক আধুনিক সমাজ গড়ার অঙ্গীকার নিয়ে শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভার নির্বাচনের পৌরবাসীর মূল্যবান ভোট, দোয়া ও আশীর্বাদ কামনা করেন।

তিনি মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার সময়  উপস্থিত ছিলেন হবিগঞ্জ সদর ও শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন অফিসার মুহাম্মদ মনিরুজ্জামান, মোঃ সাদাত চকদার মোঃ কিতাব আলী, বাহাদুর আলম, হাবিবুর রহমান হারুন, প্রমুখ।