জনপ্রিয় ৫ সংবাদ

আরো কিছু সংবাদ

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান কে?

জাতীয় পার্টির সদ্য প্রয়াত চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের স্ত্রী রওশন এরশাদ ও ভাই জিএম কাদের দুজনেই নিজেকে দলটির ‘চেয়ারম্যান’ বলে ঘোষণা দিয়েছেন। আর এর পর থেকেই দলীয় নেতৃত্ব নিয়ে পার্টির দুই অংশের মধ্যে বিরোধ চরমে উঠেছে। 

জিএম কাদের এবং রওশন এরশাদ দুজনই জাতীয় সংসদের স্পিকারকে পাল্টাপাল্টি চিঠি দেয়ার পর প্রকাশ্যে শুরু হয় বিরোধ। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যুর পর ১৮ জুলাই জিএম কাদেরকে চেয়ারম্যান ঘোষণা করেছিলেন মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গা।

বৃহস্পতিবার (০৫ সেপ্টেম্বর) সকালে একটি সংবাদ সম্মেলন করে দলটির একাংশ রওশন এরশাদকে তাদের দলের চেয়ারম্যান হিসেবে ঘোষণা করে। এর কয়েক ঘণ্টা পরে দলটির আরেক অংশ জিএম কাদেরকে তাদের বৈধ চেয়ারম্যান বলে দাবি করে।

গুলশানে রওশন এরশাদের বাসভবনে সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, ‘রওশন এরশাদ আজ থেকে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করুক। জিএম কাদেরকে আমরা উনার বরাত দিয়ে বলছি পার্টির কো-চেয়ারম্যান হিসেবে তাকে সম্মান দেওয়া হবে।’

এই সংবাদ সম্মেলনে রওশন এরশাদও বক্তব্য রেখেছেন। তিনি জাতীয় পার্টির ঐক্য ধরে রাখার জন্য নেতাকর্মীদের অনুরোধ জানান।

তিনি বলেন, ‘এরশাদ সাহেব তিল তিল করে এই পার্টিটাকে গড়ে তুলেছেন। এর ঐক্য আমরা ধরে রাখবো। তাই আমি সবাইকে বলবো, আসুন আমরা পার্টির ঐক্য অটুট রাখি। পুরনো যারা পার্টি ছেড়ে চলে গেছেন, তাদের আমরা বলবো, আপনারা ফিরে আসুন। মান-অভিমান নিয়ে থাকবেন না। আসুন আমরা একসাথে পার্টি করি।’

জবাবে বনানীতে জাপা চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে পাল্টা সংবাদ সম্মেলনে জিএম কাদের বলেন, ‘রওশনকে চেয়ারম্যান ঘোষণা দলীয় শৃঙ্খলাবিরোধী।’

এসময় রওশনপন্থী নেতাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার কথাও জানান তিনি।

তিনি বলেন, দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী এবং দলের চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ যে দায়িত্ব দিয়ে গেছেন, সে হিসেবেই তিনি বৈধভাবে পার্টির চেয়ারম্যান রয়েছেন।

জাতীয় পার্টি ভেঙে গেল কিনা বা বিভক্ত হলো কিনা, এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘কেউ ঘোষণা দিলেই পার্টি ভাগ হয়ে যায় না।’

এমন পরিস্থিতিতে দলটি আবারও ভাঙনের মুখে পড়েছে বলে মনে করছেন নেতাকর্মীদের অনেকে।

জাতীয় পার্টির যে অংশটি রওশন এরশাদের গুলশানের বাসভবনে সংবাদ সম্মেলন করে নেতৃত্ব নিয়ে এসব ঘোষণা দেন, তাদের মধ্যে দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মুজিবুল হক চুন্নু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

অন্যদিকে জিএম কাদেরের সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জিয়াউদ্দিন বাবলু, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলাসহ নেতাকর্মীরা।

দুই সংবাদ সম্মেলনের কোনোটিতেই উপস্থিত ছিলেন না মশিউর রহমান রাঙ্গা। যদিও দু’পক্ষই মহাসচিব হিসেবে তার নামই ঘোষণা করে। তবে তাকে গত কয়েকদিন ধরে জিএম কাদেরের সাথে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দেখা গেছে বলে মন্তব্য করে বিবিসি বাংলা।

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদের মৃত্যুতে রংপুর-৩ সংসদীয় আসন শূন্য হওয়ায় সেখানে উপনির্বাচন হতে যাচ্ছে। সেই উপনির্বাচনকে কেন্দ্র করেও জাতীয় পার্টির অভ্যন্তরীণ কোন্দল বা দ্বন্দ্বের বিষয়গুলো প্রকাশ্যে আসে।

জেনারেল এরশাদ বেঁচে থাকতেই তার দল জাতীয় পার্টি বিভিন্ন সময় কয়েক ভাগে ভাগ হয়েছিল। এখন পারিবারিক এবং ক্ষমতার দ্বন্দ্ব থেকে দলটিতে বিভক্তি আবারও দৃশ্যমান হচ্ছে।