বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন লঙ্ঘন করে দেশীয় বিরল প্রজাতির শালিক পাখি পালনের অভিযোগ উঠেছে হবিগঞ্জের মাধবপুর থানার এক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।
ওই পুলিশ কর্মকর্তার নাম মো:গোলাম কিবরিয়া। তিনি মাধবপুর থানার অধীনস্ত কাশিমনগর পুলিশ ফাঁড়িতে পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক(এএসআই) পদে কর্মরত রয়েছেন।
সম্প্রতি ওই কর্মকর্তা হবিগঞ্জ জেলায় সেরা ওয়ারেন্ট তামিল কর্মকর্তা হিসেবে পুলিশ সুপারের কাছ থেকে পুরস্কার পেলেও বন্যপ্রাণীর আইন লঙ্ঘনের এই প্রকাশ্য ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন স্থানীয় বন বিভাগের কর্মকর্তারা।
একাধিক সূত্র জানাচ্ছে, ওই কর্মকর্তা উপজেলার কাশিমনগর বাজারের একটি বাড়িতে বাসা ভাড়া নেওয়ার পর থেকে তার বাড়িতে একটি দেশীয় শালিক পাখি পোষছেন। যা দেখে এলাকার অনেকেই বন্যপাখি পালনে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন।
এদিকে,বন বিভাগের মাধ্যমে কাশিমনগর পুলিশ ফাঁড়ির অনেক সদস্য বন্যপ্রাণী উদ্ধারে সহযোগিতা করলেও ওই পুলিশ কর্মকর্তায় এমন প্রকাশ্য আইন লঙ্ঘনে বিষ্ময় প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।
প্রত্যক্ষদর্শী স্বপন মির্জা জানান, কয়েকদিন ধরে দেখছি তিনি একটি শালিক পাখি তার ঘরে পোষা হচ্ছে। হতে পারে তার বাচ্চারা এটি পালে। আমি এটি অনেককে জানিয়েছি। পুলিশ হওয়ার কারণে কেউ ভয়ে কথা বলছে না।
স্বেচ্ছাসেবী বন্যপ্রাণী সংগঠন পাখি প্রেমিক সোসাইটির যুগ্ম আহ্বায়ক বিশ্বজিৎ পাল জানান, রক্ষক ভক্ষকের ভূমিকায় থাকলে এ সমাজ থেকে কি বা শিখার আছে? এই কাজের জন্য পুলিশ কর্মকর্তার অনুশোচনা করা উচিত।
এ বিষয়ে জানতে গোলাম কিবরিয়ার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়ে ওঠেনি।
যোগাযোগ করা হলে সিলেটের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড.জাহাঙ্গীর আলম জানান, বন্যপ্রাণী আইন অনুসারে পাখি পালন কিংবা আটকে রাখা একটি দণ্ডনীয় অপরাধ।তিনি যদি এটা করে থাকেন তাহলে অবশ্যই তিনি গর্বিত কাজ করেছেন। পুলিশ কর্মকর্তার পাখি পালনের বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
প্রসঙ্গত,বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন, ২০১২ এর ৩৮ (২)ধারা অনুযায়ী, কোন ব্যক্তি তফসিল কোন পাখি বা পরিযায়ী পাখির ট্রফি বা অসম্পূর্ণ ট্রফি, মাংস দেহের অংশ সংগ্রহ করিলে, দখলে রাখিলে বা ক্রয় বা বিক্রয় করিলে বা পরিবহন করিলে তিনি অপরাধ করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবেন এবং উক্তরূপ অপরাধের জন্য তিনি সর্বোচ্চ ৬ (ছয়) মাস পর্যন্ত কারাদন্ড অথবা সর্বোচ্চ ৩০ (ত্রিশ) হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদন্ড অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হইবেন এবং একই অপরাধের পুনরাবৃত্তি ঘটাইলে সর্বোচ্চ ১ (এক) বৎসর পর্যন্ত কারাদন্ড অথবা সর্বোচ্চ ৫০ (পঞ্চাশ) হাজার টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হইবেন।