হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ উপজেলার কাকাইলছেও গ্রামে ফেসবুকে দেওয়া একটি স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে বিএনপি সমর্থিত দুই পক্ষের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) সকাল ৭টা থেকে প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে চলা এই সংঘর্ষে রাসেল মিয়া (৪৫) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন এবং উভয় পক্ষের শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ও সেনাবাহিনী যৌথভাবে অভিযান পরিচালনা করে।
নিহত রাসেল মিয়া কুমেদপুর এলাকার সুজাত মিয়ার ছেলে। আহতদের মধ্যে রাব্বি মিয়া (১৮), ছাব্বির (২১), ইনতাজ আলী (১৬), সেলিম (২৫), বাবলু (৩৫), জিয়াউর (৫০), তকদির (২৮), আলতু মিয়া (১৮), রায়হান (২৮), আশরাফ উদ্দিন (২৪), মাসুম (২৬), জীবন (২৮) ও আমেনা খাতুন (২৫)সহ আরও অনেকে বর্তমানে আজমিরীগঞ্জ উপজেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসে দুই পক্ষের লোকজনের মধ্যে আবারো হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, কিশোরগঞ্জের ইটনা–মিঠামইন আসনে বিএনপির মনোনয়নকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিরোধ চলছিল। এডভোকেট ফজলুর রহমান মনোনয়ন পাওয়ার পর তার সমর্থক কাকাইলছেও গ্রামের বিএনপি নেতা হান্নান মিয়া ফেসবুকে প্রচারণা শুরু করেন। অন্যদিকে একই আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী সাবেক ডিসি রহিম মোল্লার সমর্থকরা এতে ক্ষুব্ধ ছিলেন। সোমবার বিকেলে হান্নান মিয়া সওদাগর পরিবারের এক মৃত সদস্যকে নিয়ে অবমাননাকর স্ট্যাটাস দিলে উত্তেজনা চরমে পৌঁছায় এবং তাদের সঙ্গে বিএনপি নেতা আল কোরআন সওদাগরের বাকবিতণ্ডা শুরু হয়।
অভিযোগ রয়েছে, সোমবার রাতে হান্নান মিয়ার অনুসারীরা আল কোরআন সওদাগরের দোকানে হামলা চালিয়ে ফ্রিজ, সাইকেল, মোবাইল ফোন, আসবাবপত্রসহ মূল্যবান সামগ্রী ভাঙচুর ও লুটপাট করে। এছাড়া কুহিন সওদাগরের ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠানেও ভাঙচুর চালানো হয়। অন্যদিকে হান্নান মিয়ার পক্ষ দাবি করে সওদাগর পরিবারের লোকজনই প্রথমে তাদের ফার্নিচারের দোকানে হামলা চালিয়েছিল এবং তারা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত চায়।
আজমিরীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আকবর আলী বলেন, ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করেই মূলত সংঘর্ষের সূত্রপাত। রাসেল মিয়াকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তার শরীরে দৃশ্যমান আঘাতের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তিনি আরও জানান, এলাকায় নিরাপত্তা জোরদারে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

