৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
সন্ধ্যা ৬:০৬

জনপ্রিয় ৫ সংবাদ

আরো কিছু সংবাদ

আজ মেজর জেনারেল এম এ রবের মৃত্যু বার্ষিকী

 

মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের উপ-সর্বাধিনায়ক এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রথম চীফ অব আর্মি স্টাফ হবিগঞ্জের কৃতি সন্তান মরহুম মেজর জেনারেল এম এ রব-এর ৪৫ তম মৃত্যু বার্ষিকী।

১৯৭৫ সালের ১৪ নভেম্বর ৫৬ বছর বয়সে রক্তশূন্যতা জনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে ঢাকায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন স্বাধীনতা যুদ্ধের এই মহান সৈনিক। মৃত্যুর পর হবিগঞ্জ শহরের পাশে খোয়াই নদীর তীরে উমেদনগর গ্রামের কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

চিরকুমার এই স্বাধীনতা সংগ্রামী ১৯১৯ সালে বানিয়াচঙ্গ উপজেলার খাগাউড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৩৯ সালে সিলেট এমসি কলেজ হতে স্নাতক ডিগ্রী লাভের পর তিনি ভারতের আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় হতে এম এ ডিগ্রী লাভ করে তদানীন্তন বৃটিশ-ভারত সেনাবাহিনীতে যোগ দেন।

১৯৪৪ সালে সেনাবাহিনীতে কমিশন্ড লাভের পর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন সময়ে বার্মা, মালয়, সুমাত্রা, জাভা এবং পরবর্তীকালে ১৯৬৫ সালে কাশ্মীর সীমান্তে যুদ্ধ ও প্রতিরক্ষায় সক্রিয় অংশ গ্রহণ করেন। পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনের পর লেফটেন্যান্ট কর্ণেল পদে থাকাকালে ১৯৭০ সালে অবসর গ্রহণের পর রাজনীতিতে যোগ দেন।

একই বছর তিনি আওয়ামীলীগ প্রার্থী হিসাবে বানিয়াচঙ্গ-নবীগঞ্জ ও আজমিরীগঞ্জ নির্বাচনী এলাকা হতে জাতীয় পরিষদ সদস্য নির্বাচিত হন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলে প্রতিরোধ সংগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। ১৯৭১ সালের এপ্রিল মাসে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার গঠিত হওয়ার পর তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর চীফ অব স্টাফ পদে নিযুক্ত হন এবং প্রধান সেনাপতি জেনারেল এম এ জি ওসমানীর সহকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

যুদ্ধের শেষ পর্যায়ে জেনারেল ওসমানীর হেলিকপ্টার লক্ষ্য করে মেশিনগানের গুলি বর্ষিত হলে তার সঙ্গী মেজর জেনারেল আব্দুর রব গুরুতর আহত হন। চরম বিপজ্জনক পরিস্থিতি ও বিপত্তির মুখে দায়িত্ব পালনে অসাধারণ শৌর্য্যবির্যের জন্য মুক্তিযুদ্ধের পর সরকার তাকে “বীর উত্তম” খেতাব দান করেন। ১৯৭২ সালের ৭ এপ্রিল পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর চীফ অব স্টাফ পদে বহাল ছিলেন।

অবসর গ্রহণ তালিকা সংশোধনের পর তাকে অবৈতনিক মেজর জেনারেল পদ মর্যাদা দান করা হয়। স্বাধীনতা পরবর্তীকালে মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট গঠন ও পরিচালনার দায়িত্ব তিনি সফলভাবে পালন করেন। এই ট্রাস্ট এবং এর সুফল প্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাগণ তার নিরলস ও নিঃস্বার্থ প্রচেষ্টার কাছে ঋণী।

মেজর জেনারেল এম এ রব আমাদের জাতীয় ইতিহাসে চিরস্মরণীয় নাম।
তাঁর ৪৫ তম মৃত্যু বার্ষিকীতে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছে হবিগঞ্জ নিউজ পরিবার সহ হবিগঞ্জ বাসী।