১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
সকাল ৮:০৯

জনপ্রিয় ৫ সংবাদ

আরো কিছু সংবাদ

নিজেদের পথেই ঝুঁকি নিয়েও এগুচ্ছে যুক্তরাজ্য

ব্রেক্সিটের কারণে যুক্তরাজ্য ইতিমধ্যে ক্ষতির শিকার হয়েছে। দেশটির অর্থনীততে প্রভাব পড়েছে। অনেকগুলো ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও তাদের প্রধান কার্যালয় যুক্তরাজ্য থেকে সরিয়ে নিয়েছে। ব্রেক্সিটের প্রভাবে যুক্তরাজ্যের ক্ষতির কয়েকটি উল্লেখযোগ্য খাত হলো প্রবৃদ্ধি, বাণিজ্য ও কর্মসংস্থান।

ঝুঁকি মাথায় নিয়েই ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে দেশটি বিচ্ছেদ দিয়ে বছর শুরু করে। তারপর সারা বছর কাটে উদ্বেগ-অনিশ্চয়তায়। বছরের একদম শেষ প্রান্তে এসে বিচ্ছেদসংক্রান্ত হিসাব-নিকাশ পাকাপাকি করতে পেরে একটা বড় স্বস্তি পায় যুক্তরাজ্য। তবে দীর্ঘদিনের জোটবদ্ধ সম্পর্ক চুকিয়ে একলা চলার জন্য যুক্তরাজ্যকে ইতিমধ্যে মাশুল গুনতে হচ্ছে। ভবিষ্যতেও দেশটিকে নানা ঝুঁকির মধ্য দিয়ে যেতে হতে পারে।

যুক্তরাজ্যের বিচ্ছেদের গল্পটি বেশ লম্বা। অনেক টানাপোড়েনের পর ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) থাকা না-থাকার প্রশ্নে ২০১৬ সালে যুক্তরাজ্যে গণভোট হয়। গণভোটে ইইউ থেকে যুক্তরাজ্যের বেরিয়ে যাওয়ার (ব্রেক্সিট) পক্ষে ঐতিহাসিক রায় আসে। ব্যবধান খুব বেশি নয়। ৫২ শতাংশ ব্রেক্সিটের পক্ষে, ৪৮ শতাংশ বিপক্ষে। রায়ের পর বিচ্ছেদ কার্যকরের রূঢ় বাস্তবতার মুখোমুখি হয় যুক্তরাজ্য।

২০২০ সালের ৩১ জানুয়ারি আনন্দ-বেদনার মিশ্র অনুভূতির মধ্য দিয়ে ইইউর সঙ্গে যুক্তরাজ্যের বিচ্ছেদ কার্যকর হয়। ইতি ঘটে দীর্ঘ ৪৭ বছরের সম্পর্কের। যুক্তরাজ্য থেকে নেমে যায় ইইউর পতাকা। ইইউ থেকে সরে যুক্তরাজ্যের পতাকা।

ব্রেক্সিট নিয়ে যুক্তরাজ্যে শুরু হয় তুমুল তর্কবিতর্ক, এমনকি কাদা–ছোড়াছুড়ি। রাজনৈতিক বিরোধে পেরিয়ে যায় তিন বছরের বেশি সময়। ব্রেক্সিট বিরোধে থেরেসা মের বিদায়ের পর ২০১৯ সালের জুলাইয়ে নতুন প্রধানমন্ত্রী হন বরিস জনসন। কট্টর ব্রেক্সিটপন্থী এই নেতা একই বছরের ডিসেম্বরের মধ্যবর্তী নির্বাচনে বিপুল জয় পান। সুদৃঢ় অবস্থান নিয়ে ক্ষমতায় ফেরেন তিনি। এবার ব্রেক্সিট কার্যকরের পথ সহজ হয়ে যায়। ২০২০ সালের ৩১ জানুয়ারি আনন্দ-বেদনার মিশ্র অনুভূতির মধ্য দিয়ে ইইউর সঙ্গে যুক্তরাজ্যের বিচ্ছেদ কার্যকর হয়। ইতি ঘটে দীর্ঘ ৪৭ বছরের সম্পর্কের। যুক্তরাজ্য থেকে নেমে যায় ইইউর পতাকা। ইইউ থেকে সরে যুক্তরাজ্যের পতাকা।

একদম শেষ মুহূর্তে আসে সুখবর। আসে বহুল কাঙ্ক্ষিত সমাধানের ঘোষণা। দীর্ঘ অনিশ্চয়তা ও দোলাচলের পর ২৪ ডিসেম্বর দুই পক্ষ একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর ঘোষণা দেয়।

30.12.2020 B

https://twitter.com/BorisJohnson/status/1342123159181516802?ref_src=twsrc%5Etfw%7Ctwcamp%5Etweetembed%7Ctwterm%5E1342123159181516802%7Ctwgr%5E%7Ctwcon%5Es1_&ref_url=https%3A%2F%2Fwww.prothomalo.com%2F

উল্লাসে ফেটে পড়েন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। টুইট করেন ‘ডিল ইজ ডান’। সঙ্গে জুড়ে দেন নিজের উচ্ছ্বসিত একটি ছবি। দুই হাত উঁচুতে তুলে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বিজয়ের ভঙ্গিমা প্রকাশ করেন তিনি। পরে বরিস বলেন, এযাবৎকালের সবচেয়ে বড় বাণিজ্য চুক্তি তাঁরা করেছেন। অন্যদিকে ইইউর প্রধান উরসুলা ভন ডার লিয়েন বলেন, দীর্ঘ ও ঝড়ঝঞ্ঝাপূর্ণ পথ পাড়ি দিয়ে একটা ভালো চুক্তি হয়েছে।

চুক্তিটি ১ জানুয়ারি কার্যকর হবে। চুক্তি কতটা ভালো হয়েছে, তা স্পষ্ট হতে সময় লাগবে। তবে ‘নাই মামার চেয়ে কানা মামা ভালো’, এই অর্থে চুক্তি ছাড়া বিচ্ছেদের চেয়ে চুক্তি হওয়ার বিষয়টি অবশ্যই ভালো।

ব্রেক্সিটপন্থীরা যতই উল্লাস করুক না কেন, এই বিচ্ছেদের কারণে যুক্তরাজ্য ইতিমধ্যে অনেক মূল্য দিয়েছে। দেশটির অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে চরম বিভক্তি সৃষ্টি হয়েছে। ইইউর সঙ্গেও কম তিক্ততা হয়নি। ব্রেক্সিট সামাল দিতে হিমশিম খাওয়ার দরুণ বৈশ্বিক রাজনীতিতে যুক্তরাজ্যের দুর্বলতা লক্ষ করা গেছে। দেশটির অর্থনীতিও ক্ষতির শিকার।

২২ ডিসেম্বর দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য ও সেবা খাতকে গুরুতর ঝুঁকির মুখে ফেলেছে ব্রেক্সিট।

ব্রেক্সিটের কারণে যুক্তরাজ্যকে ভবিষ্যতে আরও মূল্য দিতে হতে পারে বলে বিশ্লেষকেরা পূর্বাভাস দিচ্ছেন।

সূত্র : প্রথম আলো