সরকার মালিকানাধীন ন্যাশনাল টি কোম্পানির অধীনে পরিচালিত ১২টি চা বাগানের মধ্যে অন্যতম হলো হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার তেলিয়াপাড়া চা বাগান।
প্রায় ৩ হাজার একর জমি জুড়ে বিস্তৃত এ বাগানটির ফাঁড়ি হলো সাতছড়ি চা বাগান। পাহাড়ি উঁচু জমিতে গড়ে ওঠা এ বাগান প্রকৃতিতে আলাদা দ্যুতি ছড়াচ্ছে।
তেলিয়াপাড়ার এক পাশে রয়েছে সুরমা চা বাগান, অপর পাশে ভারতের সীমান্ত। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা এ বাগান যে কারো মন কেড়ে নেয়। এ বছরও চা উৎপাদনে বাম্পার ফলন হয়েছে, যা সম্ভব হয়েছে শ্রমিক ও কর্তৃপক্ষের গভীর সমন্বয়ের কারণে। বর্তমানে প্রায় ১ হাজার ৩শ’ শ্রমিক এখানে চা উৎপাদনে নিয়োজিত রয়েছেন।
ব্যবস্থাপকের প্রশংসায় শ্রমিকরা
বাগানের ব্যবস্থাপক দেওয়ান বাহা উদ্দিন আহমেদ লিটন এর নেতৃত্বে শ্রমিকরা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে কাজ করছেন। শ্রমিকরা জানিয়েছেন, তার নেতৃত্বে বাগানে আবারও উৎপাদন বাড়ছে। এর আগে তিনি দুইবার সহকারী ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে উৎপাদনে সফলতা এনেছিলেন।
শ্রমিকদের মতে, তার আন্তরিকতা ও দূরদর্শিতার কারণেই তেলিয়াপাড়া বাগান লোকসান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে নতুন উৎপাদনের সাফল্য অর্জন করছে। অফিস স্টাফ ও শ্রমিকরা ব্যবস্থাপকের নির্দেশনা মেনে কাজ করছেন মনোযোগের সাথে।
বাম্পার ফলন ও লক্ষ্য ছাড়িয়ে যাওয়া
চা উৎপাদনের মৌসুম মার্চের মাঝামাঝি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত চলে। চলতি বছর তেলিয়াপাড়া বাগানে ৫ লাখ কেজি চা পাতা সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও ইতোমধ্যে বাম্পার ফলন হয়েছে এবং লক্ষ্য ছাড়িয়ে যাবে বলে বাগান সূত্রে জানা গেছে।
পরিদর্শনকালে দেখা যায়, নারী-পুরুষ শ্রমিকরা পুরোদমে চা পাতা কুঁড়ি সংগ্রহে ব্যস্ত। পাশাপাশি নতুন ছায়াবৃক্ষ রোপণ করে বাগানকে আরও সবুজ করে তোলা হচ্ছে। পাখপাখালির কলতান আর শ্রমিকদের পদচারণায় তেলিয়াপাড়া এক জীবন্ত প্রকৃতির প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠেছে।
ন্যাশনাল টি কোম্পানির চা বাগানসমূহ
হবিগঞ্জে ন্যাশনাল টি কোম্পানির মোট ৪টি চা বাগান রয়েছে— মাধবপুরে জগদীশপুর ও তেলিয়াপাড়া, আর চুনারুঘাটে চন্ডিছড়া ও পারকুল। এসব বাগান চা উৎপাদনের পাশাপাশি পরিবেশ রক্ষায়ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।