হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে ডাকাতিকালে যাত্রীর গাড়ি ভেবে পুলিশের গাড়ি ব্যারিকেড দিয়ে আটক করে হামলা চালিয়েছে একদল ডাকাত।
এ সময় ডাকাতদল ৩/৪টি গাড়ি ডাকাতি করে নেয়।
এদিকে পুলিশ গাড়ি থেকে নামলে ডাকাতরা পালিয়ে যায় বলে দাবি পুলিশের।
ঘটনাটি ঘটেছে ২৪ শনিবার দিবাগত রাত(২৫ মে)রবিবার আনুমানিক ১টার দিকে হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং উপজেলা সদরের ৪নং দক্ষিণ পশ্চিম ইউনিয়নের শরীফ উদ্দিন সড়কের কুন্ডরপাড় ব্রীজ পেরিয়ে আইনজইন নামক স্থানে।
ডাকাতের কবলে পড়া দু’টি মিনি ট্রাক ও একটি প্রাইভেট কার গাড়িসহ ৩/৪টি গাড়ির চালক ও যাত্রীদের মারপিট করে তাদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন,নগদ টাকা সহ দেড় লক্ষাধিক টাকার মালামাল নিয়ে যায় ডাকাতদল।
ডাকাতদলের প্রহারে আহত এক চালক ও পুলিশের কাছ থেকে জানাযায়, শনিবার রাত ১টার দিকে উল্লেখিত স্থানে
১৫/১৬ জনের একদল ডাকাত সড়কে বিদ্যুৎতিক খুঁটি ফেলে তাদের গতিরোধ করে এবং এসময় বেশ কয়েকটি গাড়ি আটকিয়ে ডাকাতি সংঘটিত করেছিলো একদল ডাকাত।
এমন সংবাদ পেয়ে ডিউটিরত কয়েকজন পুলিশ সিএনজি চালিত অটোরিকশা যোগে সেখানে গেলে ডাকাতরা যাত্রীর গাড়ি ভেবে তাদের গাড়িটিও আটক করে হামলা চালায়।
এক পর্যায়ে পুলিশ গাড়ি থেকে নামলে ডাকাতরা পালিয়ে যায় বলে পুলিশ জানায়।
খবর পেয়ে হবিগঞ্জ থেকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাতেই ঘটনাস্থলে আসেন এবং বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন।
তবে ২৫ মে (রবিবার)দুপুর ২টা পর্যন্ত কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে বানিয়াচং থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) গোলাম মোস্তাফার সাথে যোগাযোগ করে তার কোন সাড়া না পাওয়ায় বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
পরে এ ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(বানিয়াচং আজমিরীগঞ্জ সার্কেল) প্রবাস কুমার সিংহ এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান,ডাকাতরা পুলিশের গাড়িটি যাত্রীর গাড়ি ভেবে হামলা করেছে। তবে কোনো পুলিশ আহত হয়নি।
পুলিশ গাড়ি থেকে নেমে ধাওয়া দিলে ডাকাতরা পালিয়ে যায়।
তিনি আরও বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করতে রাত থেকে তিনি সহ তাদের পুলিশের একাধিক টিম বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছেন।
তবে এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।
উল্লেখ্য,ইতিপূর্বে ও বানিয়াচং থানা পুলিশের এসআই ফরিদ ও কনস্টেবল সেকান্দর নামের দুই পুলিশ সদস্যকে মারপিট করে আহত করেছিলো কুখ্যাত ডাকাত ও এক ইউপি সদস্য মার্ডার মামলার প্রধান আসামি ও তার দলবল।
তখনকার সময়ের ঘটনায় পুলিশ চিরুনি অভিযান পরিচালনা করে বেশকিছু ডাকাত গ্রেফতার করেছিলো।
গতকাল রাতের ডাকাতির ঘটনার পর পর এই বিষয় গুলো আবারও সামনে আসছে এবং এসব তথ্য প্রদান করছেন এই ইউনিয়নের জনসাধারণ।
এছাড়াও চিহ্নিত ডাকাতরা বিভিন্ন মামলার আসামী হয়ে পলাতক থাকার পর গত বছরের ৫ আগষ্টের পর থেকে পুনঃরায় তারা বাড়িতে ফিরে এসেছে বলেও কেউ কেউ জানিয়েছেন।
এমনকি এদের মধ্যে কেউ কেউ চট্টগ্রাম থেকে মরণ নেশা ইয়াবাসহ বিভিন্ন ধরনের মাদক এনে ব্যবসা পরিচালনা করে অপরাধ মূলক কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছেও বলে এলাকাবাসীর কাছ থেকে জানাযায়।
তারা আরও জানিয়েছেন,এখানে ১০ বছর পূর্বে কুখ্যাত ডাকাত সাইফুল ইসলাম ওরফে(ঝিলকী)
নামের এক ডাকাত পুলিশের সাথে বন্ধুক যুদ্ধে মারা যায়।
তার কয়েক বছর বানিয়াচংয়ে কোন ধরনের ডাকাতির ঘটনা সংঘটিত হয়নি।
কিন্তু ৩/৪বছর ধরে এই সড়ক সহ বানিয়াচংয়ের বিভিন্ন সড়কে একের পর এক ডাকাতির ঘটনা সংঘটিত হয়ে যাচ্ছে।
এমন ঘটনায় জনমনে আতংক দেখা দিয়েছে।
এ ব্যাপারে রবিবার বানিয়াচং থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) গোলাম মোস্তফা ডাকাতির বর্ননা দিয়ে বলেন, কেউ মামলা করতে উৎসাহ বোধ করছে না। তবে মামলার পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছেন বলেও তিনি জানান।