হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলায় নিখোঁজের একদিন পর হাওরের জলাশয় থেকে এক মাদ্রাসা ছাত্রের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত শিশুটি মেয়েদের পোশাক পরিহিত অবস্থায় উদ্ধার হয়, যা স্থানীয়দের মধ্যে রহস্যের সৃষ্টি করেছে।
বুধবার (২২ অক্টোবর) দুপুর আনুমানিক ১টার দিকে উপজেলার ৩নং দক্ষিণ-পূর্ব ইউনিয়নের দোয়াখানী মহল্লার মরতাজের হাওরের একটি ডোবা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। পরে লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়।
নিহত মাদ্রাসা ছাত্রের নাম মঈনুল হাসান (১২)। সে দোয়াখানী মহল্লার আতিকুর মিয়ার পুত্র এবং স্থানীয় দোয়াখানী দারুস সালাম মাদ্রাসার হিফজ বিভাগে অধ্যয়নরত ছিল।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) সকাল ১১টার পর থেকে মঈনুল নিখোঁজ ছিল। দুপুরে খাবারের সময়েও বাড়িতে না ফেরায় পরিবারের লোকজন খোঁজ শুরু করেন। প্রথমে মাদ্রাসার শিক্ষা সচিব মাওলানা সিরাজ উদ্দিনের মাধ্যমে মাদ্রাসায় খোঁজ নেয়া হয়, তবে জানা যায় সে সেদিন মাদ্রাসায় যায়নি।
সারা দিন এবং রাতজুড়ে খোঁজাখুঁজি করেও কোনো সন্ধান না পেয়ে বুধবার সকালে পরিবার বিষয়টি বানিয়াচং থানা পুলিশকে জানায়। সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করার প্রস্তুতি চলাকালে খবর আসে—একটি জলাশয়ে একজন “মহিলার লাশ” দেখা গেছে।
প্রথমে স্থানীয়রা ধারণা করেছিলেন এটি কোনো অজ্ঞাত মানসিক ভারসাম্যহীন নারীর লাশ। পরে কাছ থেকে দেখে বুঝতে পারেন, মৃতদেহটি আসলে মঈনুলেরই, এবং তার পরনে ছিল মেয়েদের পোশাক।
এ তথ্য জানাজানি হলে এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে বানিয়াচং থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে।
বানিয়াচং থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন,
“মাদ্রাসা ছাত্র মঈনুল হাসানের মৃত্যু রহস্যজনক। গতকাল সকাল থেকে সে নিখোঁজ ছিল। আজ সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এসআই রূপক কান্তি চৌধুরী সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করেছেন। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য হবিগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।”
তিনি আরও জানান, মৃত্যুর প্রকৃত কারণ উদঘাটনে তদন্ত চলছে। বুধবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ বা কাউকে আটক করা হয়নি।