বানিয়াচং উপজেলার ৪নং ইউনিয়নের অন্তর্গত যাত্রাপাশা গ্রামের ৬ বছরের শিশুকে একই গ্রামের পাশাপাশি ঘরের বাসিন্দা মোতাহের মিয়ার ছেলে অলিম মিয়া (১৭) ধর্ষণ করে পালিয়ে যায়।
এ বিষয়ে সবার আগে হবিগঞ্জ নিউজের একটি টিম ২১ আগস্ট রাতে হাসপাতালে গিয়ে বিস্তারিত জেনে রাত ১২.৫৩ মিনিটে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। (এখানে দেখুন)
মামলার একমাত্র ধর্ষক আসামী অলিম মিয়া (১৭) ঘটনার পরপরই পলাতক ছিল। ঘটনার গুরুত্ব অনুধাবন করে পুলিশ সুপার দিক নিদের্শনায় ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বানিয়াচং সার্কেলের তদারকিতে অফিসার ইনচার্জ বানিয়াচং থানার নেতৃত্বে বানিয়াচং পুলিশ টীম সর্বোচ্চ প্রযুক্তিগত সহায়তা ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এবং নিরলসভাবে কাজ করে ২৪ ঘন্টার মধ্যেই একমাত্র ধর্ষককে আজমিরীগঞ্জ থানাধীন জলসুখা বিরাট এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
আজ মঙ্গলবার ২৪ আগস্ট হবিগঞ্জ পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিং এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার এস এম মুরাদ আলী।
এস এম মুরাদ আলী আরো জানান, উক্ত সময় ধর্ষকের পরিবারের অন্যান্য লোকজন পার্শ্ববর্তী মন্দরী সাকিনে একটি বউভাত অনুষ্ঠানে ছিল এবং ভিকটিমের মা বাসন মাজার জন্য পুকুরঘাটে গেলে ধর্ষক ভিকটিমকে ফুসলাইয়া তাহার ঘরে নিয়ে জোরপূর্বক ভিকটিমকে ধর্ষণ করে। ভিকটিমের শোর চিৎকার শুনে ভিকটিমের মাতা ও ভাই আন্নর শাহ (৮) ভিকটিমকে আসামীর ঘর হতে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করেন।
উক্ত ঘটনার সময় ভিকটিমের যৌনাঙ্গ থেকে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল এবং তার পরনের কাপর-চোপড় রক্তাক্ত ছিল। ভিকটিমের পিতা রিকশা চালক মোঃ দিলবর শাহা ঘটনা শুনে বাহির থেকে এসে ভিকটিমকে চিকিৎস্যার জন্য দ্রুত বানিয়াচং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ নিয়ে যান। কর্তব্যরত ডাক্তার উন্নত চিকিৎস্যার জন্য ভিকটিমকে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে রেফার্ড করেন।
ঘটনায় ভিকটিমের পিতার অভিযোগের প্রেক্ষিতে বানিয়াচং থানার মামলা নং-১০, তারিখ-২২/০৮/২১ খ্রিঃ, ধারা-নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধনী-২০০৩) এর ৯(১) রুজু হয়েছে।
পুলিশ সুপার এস এম মুরাদ আলি হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে স্ব-শরীরে উপস্থিত হয়ে শিশু ভিকটিমের শারীরিক সুস্থতার খোঁজখবর নেন এবং ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
আসামী গ্রেপ্তারের ফলে ভিকটিমের পরিবারসহ এলাকার সাধারণ মানুষের মাঝে স্বস্থি ফিরে আসে। তদন্তকারী অফিসার ইতোমধ্যে ভিকটিমের পরনে থাকা রক্তমাখা কাপড়-চোপড়সহ অন্যান্য আলামত জব্দ করেছেন।
শিশু ভিকটিমের ডাক্তারি পরীক্ষা ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে এবং ভিকটিম বিজ্ঞ আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ২২ ধারায় জবানবন্দী দিয়েছেন।
গ্রেফতারকৃত আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত আছে এবং সে ঘটনার সাথে জড়িত থাকার বিষয়ে প্রাথমিকভাবে স্বীকারও করেছে। গ্রেফতারী অভিযানে স্থানীয় লোকজন পুলিশকে তথ্য দিয়ে সহায়তা করে। উক্ত মামলার সুষ্ঠ তদন্ত দ্রুত সমাপ্ত করে পুলিশ রিপোর্ট আদালতে দাখিলের মাধ্যমে আসামীর দৃষ্টান্তমূলক সাজা নিশ্চিত করা হবে বলে জানান পুলিশ সুপার এস এম মুরাদ আলী।