জনপ্রিয় ৫ সংবাদ

আরো কিছু সংবাদ

মাধবপুরে সাংবাদিককে প্রাণনাশের হুমকি, ৯ মাসেও তদন্ত প্রতিবেদন নেই!

হবিগঞ্জের মাধবপুরে সংবাদ প্রকাশের জেরে প্রাণনাশের হুমকির শিকার হওয়া দৈনিক কালবেলা পত্রিকার সাংবাদিক মুজাহিদ মসির সাধারণ ডায়েরি (জিডি) নথিভুক্ত হলেও ৯ মাস পেরিয়ে গেছে, তবু তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেননি তদন্ত কর্মকর্তা।

তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) সাইদুর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে—ঘুষ না দেয়ায় তিনি আদালতে প্রসিডিউশন রিপোর্ট পাঠাচ্ছেন না।

 

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ১ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখে দৈনিক কালবেলা পত্রিকায় “সরকারি কালভার্টে গেট দিয়ে রাস্তা বন্ধ” শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। সংবাদে মাধবপুর উপজেলার আন্দিউরা গ্রামের রিনা বেগম ও তার লোকজনের বিরুদ্ধে সরকারি রাস্তা দখলের অভিযোগ তোলা হয়।

সংবাদ প্রকাশের পরদিনই রিনা বেগম সাংবাদিক মুজাহিদ মসিকে ফোনে প্রাণনাশের হুমকি দেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ফোনকলের রেকর্ডসহ সব প্রমাণ তদন্ত কর্মকর্তার কাছে হস্তান্তর করা হলেও, তিনি এখনও কোনো প্রতিবেদন দেননি।

বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

যোগাযোগ করা হলে এসআই সাইদুর রহমান বলেন,

“মহিলার বিরুদ্ধে প্রসিডিউশন দিয়ে কি লাভ? আমি তাকে আপোসের পরামর্শ দিয়েছিলাম, কিন্তু সে রাজি হয়নি। প্রতিবেদন পাঠাতে অনেক ঝামেলা আছে। স্যার বললে পাঠাব।”

 

মাধবপুর থানার তদন্ত ওসি ইন্সপেক্টর কবির হোসেন বলেন,“বিষয়টি তদন্ত কর্মকর্তাকে জানানো হবে। ফোনে নয়, সরাসরি কথা বলাই ভালো।”

 

অপরদিকে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ,

“এটি আমার দায়িত্বকালীন সময়ের ঘটনা নয়। তারপরও খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।”

 

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, হুমকিদাতা রিনা বেগম ও তার সহযোগীরা এলাকায় অত্যন্ত প্রভাবশালী। সরকারি রাস্তা লোহার গেট দিয়ে বন্ধ করে রাখলেও ভয়ে কেউ মুখ খুলতে চান না। স্থানীয় বাসিন্দা সোহেল মিয়াও তার বিরুদ্ধে পৃথক একটি জিডি করেছেন, যার তদন্ত কর্মকর্তা মাধবপুর থানার এসআই শাহ আলম—তিনিও প্রতিবেদন দিতে সাহস পাচ্ছেন না বলে জানা গেছে।

মাধবপুর থানার প্রাক্তন ওসি,“অনেক সময় উর্ধ্বতন মহল থেকে ফোন আসে।আমার সময়ে এমনই ঘটনা ঘটেছিল। আমিও চেয়েছিলাম প্রতিবেদন দিতে।আসলে চাইলেও সবকিছু করা যায় না।”

হবিগঞ্জের প্রেসক্লাব নেতা সাংবাদিক ফখরুজ্জামান শাহ বলেন,

“প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও একজন সাংবাদিকের জিডির প্রতিবেদন না দেওয়া দুঃখজনক। এতে স্পষ্ট বোঝা যায় সাধারণ মানুষ থানায় কতটা নিরাপদ।”

 

এদিকে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে—একজন প্রভাবশালী ব্যক্তির ভয়ে কি আইনও আজ নীরব?