৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
দুপুর ২:৪৬

জনপ্রিয় ৫ সংবাদ

আরো কিছু সংবাদ

সরকারি অফিস-আদালত সীমিত পরিসরে খুলবে : প্রধানমন্ত্রী

করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে সরকারের ‘ছুটির’ মেয়াদ আরও দশ দিন বাড়লেও সরকারি অফিস-আদালত সীমিত পরিসরে চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সোমবার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে রংপুর বিভাগের আট জেলার কর্মকর্তাদের সঙ্গে মত বিনিময়ে এ সিদ্ধান্ত জানান তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের সরকারি অফিস আদালত সব সীমিত আকারে আমরা চালু করে দিচ্ছি, যাতে মানুষের কষ্ট না হয়। সামনে ঈদ। ঈদের আগে কেনাকাটা বা যা যা দরকার সেগুলোও যেন মানুষ করতে পারে।”

কিন্তু লকডাউন শিথিল হলেও মানুষ যেন সামাজিক ও শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার নিয়ম এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে, সে বিষয়ে সতর্ক করেন সরকারপ্রধান।

“এখানে একটা জিনিস মাথায় রাখতে হবে, খুব বেশি মেলামেশা সবার সাথে… এক জায়গায় জড়ো হওয়া বা খুব বড় জনসমাগম… এই জায়গা থেকে সবাইকে মুক্ত থাকতে হবে। কারণ সেখানেই কিন্তু সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ইতোমধ্যে আমরা ছুটি ঘোষণা দিয়েছি। ৫ মে পর্যন্ত ঘোষণা দিয়েছিলাম, সেটাকে আমরা ১৫ মে পর্যন্ত বৃদ্ধি করতে চাচ্ছি।

“কিন্তু সাথে সাথে যেহেতু রমজান মাস, এই রমজান মাসে যাতে কেনাবেচা চলতে পারে… দোকানপাট খোলা, যেহেতু রোজার সময় ইফতারি কেনা বা সেহরি খাওয়া বা বাজারঘাট করা- সেগুলো যাতে চলতে পারে, সেদিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি রেখে আমরা সেগুলো খোলারও… মানে চালু রাখার নির্দেশ দিয়ে দিয়েছি।”

শেখ হাসিনা বলেন, প্রতিটি জেলায় যেসব ক্ষুদ্র শিল্প কারখানা রয়েছে সেগুলো চালানো যাবে। অর্থনীতির চাকা যাতে গতিশীল থাকে, সরকার সেভাবেই নির্দেশনা দিয়েছে।

“সেখানে মানুষকে সুরক্ষিত রেখে, মানুষের স্বাস্থ্যের দিকে নজর রেখে সেগুলো যেন পরিচালিত হতে পারে, তার জন্য যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া… এ ব্যাপারে বেশ কতগুলো নির্দেশনা আপনারা শিগগিরই পাবেন। এটা আমাদের কেবিনেট ডিভিশন থেকে ঘোষণা দেওয়া হবে।”

করোনাভাইরাসের এ সঙ্কট যে পুরো বিশ্বকেই বিপদে ফেলে দিয়েছে, সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, “আমরা এই ব্যাপারে যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বন করায় একটা ভালো ফলাফলও পাচ্ছি। সেজন্য আমি দেশবাসীকে ধন্যবাদ জানাই।”

শেখ হাসিনা বলেন, দেশকে সুরক্ষিত করা, দেশের মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, এই ভাইরাসের কারণে মানুষ যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি দেওয়া- এটাই সরকারের লক্ষ্য।

“আর সেই লক্ষ্য নিয়ে আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছি। যেহেতু এটা অত্যন্ত সংক্রামক একটি রোগ, হাঁচি-কাশির মাধ্যমে সংক্রমিত হয়, সেজন্য দেশবাসীকে আমি অনুরোধ করব, যেহেতু রোজার মাস, আমরা বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছি, ধীরে ধীরে আমরা কিছু কিছু জিনিস উন্মুক্ত করে দিচ্ছি। কিন্তু সেখানে আপনাদের সবাইকে নিজেকে সুরক্ষিত করতে হবে। আবার অপরকেও সুরক্ষিত রাখতে হবে “

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষে থেকে দেওয়া নির্দেশনা মেনে চলার পাশাপাশি সবাইকে মুখে মাস্ক ব্যবহারের আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

রেলে সব পণ্য পরিবহনের নির্দেশ

করোনাভাইরাস সঙ্কটের মধ্যে সড়ক পরিবহন বন্ধ থাকায় রেলযোগে সারা দেশে পণ্য পরিবহন উন্মুক্ত করার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ভিডিও কনফারেন্সে পঞ্চগড় জেলার কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি পঞ্চগড় জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে যুক্ত হওয়া রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজনের কাছে রেলযোগে পণ্য পরিবহনের অগ্রগতি জানতে চান।

এ সময় মন্ত্রী বলেন, রেলের মাধ্যমে মাছ-মাংস, দুধ-ডিম, টমেটো-তরমুজ, শাক-সবজি, কাঁচামাল, খাদ্যদ্রব্য পরিবহনের জন্য ব্যবস্থা ছিল না। এখন তিনটি ‘লাগেজ ভ্যান’ চালু করা হয়েছে।

“ট্রেনে করে পণ্য পরিবহনের জন্য স্টেশন মাস্টাররা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াচ্ছেন। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আমাদের মোটা দাগে সম্পর্ক তৈরি করতে পারলেই ট্রেনে করে পণ্য পরিবহন করা সহজ হবে।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “সারা দেশে ‘লাগেজ ভ্যান’ সংযুক্ত করতে হবে। যেহেতু বর্তমান পরিস্থিতিতে সড়ক পরিবহন উন্মুক্ত নয়, সেজন্য সারা দেশে রেলের মাধ্যমে শুধু খাদ্য দ্রব্য নয়, যে কোনো পণ্য পরিবহন করতে হবে।”

রংপুর জেলার কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলার সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ঈদের বাজার করার সময় নিজেকে সুরক্ষিত রেখে বাজার করেন। এছাড়া রোজার সময় বাজার করবেন, কিন্তু নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে হবে।

“ঈদের সময় বেশি লোক সমাগম যেন না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। আর পারিবারিকভাবে যেন আনন্দ নিয়ে ঈদটা করতে পারে, সেই ব্যবস্থা করতে হবে।”