হবিগঞ্জের মাধবপুরে এক মাজারের ওরস উপলক্ষে আয়োজিত বাউল গান বন্ধের দাবি জানিয়ে চাঁদা উত্তোলন ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ করেছেন স্থানীয় মাদ্রাসা শিক্ষক হাফেজ মোহাম্মদ আল আমিন।
তিনি সোমবার (২৭ অক্টোবর) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও অফিসার ইনচার্জ (ওসি)-এর কাছে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।
জানা যায়,উপজেলার চৌমুহনী ইউনিয়নের দেবীপুরে নাসিম শাহ আউলিয়া ওরফে গঙ্গা জলে মাজারের বাৎসরিক পুরুষে উপলক্ষে স্থানীয় কমলপুর গ্রামে বাউল গানের চাঁদা উত্তোলনের সময় এ ঘটনা ঘটে।
অভিযোগে বলা হয়,গত ২৫ অক্টোবর মাজারের কিছু ভক্ত অটোরিকশা থামিয়ে যাত্রীদের কাছ থেকে টাকা নিচ্ছিলেন। পরে মাজারের বাউল গান আয়োজকরা অভিযোগকারীকে গান আয়োজনের জন্য টাকা দিতে বলেন। তিনি অস্বীকৃতি জানালে তার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয়।অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, “আধ্যাত্মিকতার আড়ালে কিছু ব্যক্তি নারীসহ রাতভর গান, মদ্যপান ও অনৈতিক কার্যকলাপ করছে—যা এলাকাবাসীর ধর্মীয় অনুভূতি ও মানসিক শান্তি নষ্ট করছে।”
অন্যদিকে মাজারের খাদেম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “মাজারবিরোধী একটি মহল উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। আমাদের অনুষ্ঠান ধর্ম ও সংস্কৃতির অংশ।”
স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুর রউফ বলেন, “এই এলাকায় বহু বছর ধরে বাউল গান অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে; কখনো কোনো সমস্যা হয়নি।”
মাধবপুরের ইউএনও।জাহিদ বিন কাসেম জানান, “গানের আয়োজনের আগে জেলা প্রশাসকের অনুমতি নেওয়া বাধ্যতামূলক। বিষয়টি তদন্ত করে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
হবিগঞ্জ শিল্পকলা একাডেমীর জেলা কালচারাল অফিসার জ্যোতি সিনহা বলেন, “সংস্কৃতি ও ধর্মকে বিবাদে ফেলা উচিত নয়। সুস্থ সংস্কৃতি চর্চার সুযোগ থাকা জরুরি; আর যদি কোনো শিল্পী গান-বাজনা বন্ধ করে দেন, তাদের প্রতিকূল আর্থিক প্রভাবও বিবেচনা করতে হবে।”
স্থানীয়রা আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান চান—আইনশৃঙ্খলা, ধর্মীয় মূল্যবোধ ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বিবেচনায় করে দুপক্ষের মধ্যে সমঝোতা করে বিষয়টি নিষ্পত্তি করার আহ্বান জানাচ্ছেন।

