হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে সেচ প্রকল্পের কোটি টাকার লেনদেন নিয়ে সংঘাতের আশংকা বিরাজ করছেন এলাকাবাসী।
এই বিরোধের কারণে জমিতে পানি না পেলে মারা যাবে কৃষকের হাজারো কের স্বপ্নের জমি।
জানাযায়,উপজেলা সদরের ৩নং দক্ষিণ পূর্ব ইউনিয়ন ও ৪নং দক্ষিণ পশ্চিম ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত তিনটি সেচ প্রকল্প,রায়লা
খৈয়াজোরা ও দিঘবাগ নিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ লেনদেন ও হিসাবে গরমিল এবং প্রকল্প দখলের পাঁয়তারা সহ হুমকি দমকির অভিযোগ উঠেছে প্রকল্প পরিচালনা কমিটির একাধিক সদস্যের বিরুদ্ধে।
এনিয়ে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে এবং প্রকল্প বন্ধ হয়ে গেলে মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়বেন হাজারো কৃষক।
এ বিষয়ে ২০ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) খৈয়াজোরা সেচ প্রকল্প কমিটির ম্যানেজার মোঃ সাইদুল ইসলাম বানিয়াচং উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন।
অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন,প্রকল্পে মোট ২৭ জন শরিক মিলে বিনিয়োগ করে তিনটি সেচ প্রকল্প পরিচালনা শুরু করেন।
প্রথমদিকে প্রকল্পের স্বচ্ছতাপূর্ণ ব্যবস্থাপনার জন্য কমিটির সভাপতি হিসেবে বাবুল মিয়া,সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আলমগীর মিয়া এবং ক্যাশিয়ার হিসেবে মোহাম্মদ আলীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
অভিযোগে বলা হয়েছে,প্রকল্প পরিচালনার নামে বিবাদীরা প্রত্যেক শরিকের কাছ থেকে ১ লাখ ১৭ হাজার টাকা করে মোট ৩১ লাখ ৫৯ হাজার টাকা গ্রহণ করেন।
পরে হিসাব চাইলে তারা টালবাহানা করতে থাকেন।
২৭ শরিকানার ১লাখ ১৭হাজার টাকা করে মূল ধন দিয়েছিলো।
এই মূল ধন থেকে শুধু ৭০ হাজার টাকা করে ২৭জনকে দিয়েছিলো।
তাদের মূল ধন ঐ রয়ে গেছে ৪৭ হাজার টাকা করে।
এমনকি সেচ প্রকল্পের টাকা উঠিয়েছে ১ বছরে ঐ ৩১ লাখ ৫৯ হাজার টাকা।
মূল ধন ৪৭ হাজার টাকা সহ এই বছরের ৩১ লাখ ৫৯ হাজার টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে।
এক পর্যায়ে তাদের বিষয়টি সমাধান করার জন্য বানিয়াচং উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও বিশিষ্ট পঞ্চায়েত ব্যক্তিত্ব মুজিবুল হোসাইন মারুফ মিয়া তাদের সাথে যোগাযোগ করেন সবাইকে নিয়ে বসে এটা সমাধান করার জন্য।
কিন্তু তাদের কাছ থেকে কোন সাড়া না পাওয়ায় তিনিও ব্যর্থ হয়েছেন বলে জানান শরিকানগন।
এমনকি তারা এই ২৭ জন শরিকানদের বাদ দিয়ে আগামী বছরের জন্য সেচ প্রকল্পটি হবিগঞ্জের দায়িত্বরত কর্মকর্তা উৎকোচ দিয়ে লীজ নিয়ে আসেন বলেও অভিযোগ করা হয়।
এ ঘটনা নিয়ে এলাকায় টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে বলেও জানান তারা।
এ নিয়ে যেকোনো সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশংকা বিরাজ করছেন বলেও মৌখিক ভাবে জানিয়েছেন।
এদিকে শরিকদের চাপে পড়ে প্রত্যেককে ৭০ হাজার টাকা ফেরত দেওয়া হলেও বাকি ৪৭ হাজার টাকা ও লাভের অংশ আজ পর্যন্ত পরিশোধ করা হয়নি।
বাদী সাইদুল ইসলামের অভিযোগ,বিবাদীরা সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করে কৌশলে প্রকল্পগুলোর নিয়ন্ত্রণ এককভাবে নিজেদের নামে নিতে চেষ্টা করছে।
এ বিষয়ে সামাজিক নেতৃবৃন্দ,কৃষক ও স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা একাধিকবার বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেন বিবাদী পক্ষকে কোনোভাবেই সেচ প্রকল্প দেওয়া যাবে না।
অভিযোগে আরও বলা হয়েছে,বিবাদীরা প্রকাশ্যে হুমকি ধামকি দিচ্ছে যে,প্রকল্প পাওয়ার পর তারা কৃষকদের‘উচিত শিক্ষা’দেবে।
এছাড়া প্রকল্প তাদের নামে গেলে এলাকায় মারাত্মক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়ে মারামারি,
খুনোখুনির মতো ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বাদী।
স্থানীয় কৃষকদের দাবি,শীত মৌসুমে সেচ প্রকল্প বন্ধ হয়ে গেলে ফসল মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়বে।
অভিযোগকারী পক্ষ বলেন,বিবাদীদের দখল পাঁয়তারায় তিনটি গুরুত্বপূর্ণ সেচ প্রকল্প অচল হয়ে গেলে হাজারো কৃষকের জমি পানি সংকটে পড়ে ধ্বংস হয়ে যাবে।
তাই তাদের অভিযোগের কপিটি অনুলিপি হিসাবে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা,
বিএডিসির দুই প্রকৌশলী,উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্তৃপক্ষকে দেওয়া হয়েছে।
বাদী সাইদুল ইসলাম দ্রুত প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ কামনা করে বলেন,
তদন্তের মাধ্যমে সেচ প্রকল্পের স্বচ্ছতা রক্ষায় কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
সেচ প্রকল্প নিয়ে এলাকায় সংঘাতের অস্থিরতা বিরাজ করছে।
কৃষকরা আশা করছেন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে সেচ কার্যক্রম নিয়মিত রাখা হবে এবং যেকোনো ধরনের সংঘাত এড়ানো সম্ভব হবে।
এ ব্যাপারে ২০ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) ৩১বিশিষ্ট্য সদস্যর সাক্ষরিত একটি অভিযোগ বানিয়াচং উপজেলা নির্বাহী বরাবরে দায়ের করার বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন সূত্র নিশ্চিত করেন।


