হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলা সদরের কুখ্যাত মাদক(ইয়াবা) ব্যবসায়ী স্বামী-স্ত্রী’কে বিপুল পরিমাণ ইয়াবাসহ থানা পুলিশ গ্রেফতারের ২ বছর পর আবারও কুখ্যাত (ইয়াবা) ব্যবসায়ী সাবেক সিএনজি স্টেন্ড ম্যানেজার সালেক মিয়াকে ইয়াবাসহ গ্রেফতার করে পুলিশ।
অভিযান চলাকালে অন্যান্য সহযোগী কয়েক ব্যবসায়ীরা পালিয়ে যায় বলেও জানাযায়।
গ্রেফতারকৃত কুখ্যাত (ইয়াবা) ব্যবসায়ী সালেক মিয়া(৪৫)বানিয়াচং উপজেলা সদরের ৩নং দক্ষিণ পূর্ব ইউনিয়নের দোয়াখানী মহল্লার রেশম উল্বার পুত্র।
এব্যাপারে এসআই শুভ রঞ্জন দাস বাদী হয়ে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা দায়ের করেন এবং ২৯ মে (বৃহস্পতিবার) হবিগঞ্জ আদালতের মাধ্যমে কুখ্যাত ইয়াবা ব্যবসায়ী সালেক মিয়াকে কারাগারে প্রেরণ করেন আদালত।
সূত্রে জানাযায়, কুখ্যাত (ইয়াবা) ব্যবসায়ী সালেক মিয়া ও তার স্ত্রী দীর্ঘ ২বছর পূর্বে থানা পুলিশের হাতে বিপুল পরিমাণ ইয়াবাসহ গ্রেফতার হয়।
তার বিরুদ্ধে ৪টি মাদকের মামলা চলমান রয়েছে।
এসব মামলা চলমান থাকার পরও পুলিশের চোখকে ফাঁকি দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বানিয়াচং উপজেলা সদরসহ ভাটি উপজেলার এই মরণ নেশা মাদক (ইয়াবা)
পাইকারি বিক্রি সহকারে নিজে ও তার লোকজন দ্ধারাতে ইয়াবার খুচরা ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিলো।
এই কুখ্যাত ইয়াবা ব্যবসায়ী সালেক উত্তর বানিয়াচংয়ের বেশ কয়েকজন মাদক(ইয়াবা)
সম্রাটদের নিয়ে পুরো উপজেলায় একটি সিন্ডিকেট তৈরী করে দীর্ঘদিন ধরে বানিয়াচং উপজেলাসহ ভাটি অঞ্চলের উপজেলা গুলোতেও তারা এই মাদক
(ইয়াবা) সরবরাহ করত খুচরা ব্যবসায়ীদের নিকট।
এছাড়াও তাদের এই সিন্ডিকেট দ্ধারাতে উপজেলা সদরের ৪টি ইউনিয়নে খুচরা ব্যবসা পরিচালনা করা হতো।
আর এসব সিন্ডিকেটের মধ্যে তাদেরকে সহযোগীতা করে আসছিলো চিহ্নিত কিছু চোর,ডাকাত,ছিনতাইকারী,অপ্রাপ্ত বয়স্ক মিশুক চালক ও মোটরসাইকেল দিয়ে যাত্রী বহনকারী কিছু সংখ্যক অপরাধীরা।
তাদের মাধ্যমে বিভিন্ন ইউনিয়নের খুচরা ব্যবসায়ী ও ইয়াবা সেবনকারীদের মধ্যে নিরাপদে পৌঁছে দেওয়া হতো বলেও জানান বিভিন্ন এলাকার অনেক ভুক্তভোগী পরিবার ও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন সেবনকারী এসব বিষয়ে তথ্য প্রদান করেন।
এদিকে সিন্ডিকেট পরিচালনাকারীদের মধ্যে প্রধান হিসাবে ১নং উত্তর পূর্ব ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের দত্তপাড়া মহল্লার আব্দুলক মিয়ার পুত্র সাইদুল হক পরিচালনা করছে তার অধিনস্ত ৮/১০জন খুচরা ইয়াবা ব্যবসায়ীদের দ্ধারাতে।
যাদের বিরুদ্ধে রয়েছে ৫/৭টি করে চুরি,ছিনতাই ও ডাকাতির মতো মামলা।
এমনকি এই সাইদুল হকের বিরুদ্ধে রয়েছে অন্তত ১৬ থেকে ১৭টি মামলা।
এতোসব মামলা থাকার পরও বাড়ির পাশের এক মোবাইল মিকার ব্যবসায়ী,চতুরঙ্গ রায়ের পাড়া মহল্লার ঠাকুর বাড়ির এক ব্যবসায়ী,নন্দীপাড়া মহল্লার তিন জন ব্যবসায়ী,ইনাথখানী মহল্লার দুই ব্যবসায়ী,তাম্বলীটুলা ও সাউথপাড়ার দুইজন ব্যবসায়ী,সৈদরটুলা মহল্লার একজন ব্যবসায়ী,রঘুচৌধরী পাড়া ও মাতাপুর মহল্লার দুইজন ব্যবসায়ী,কামালখানী মহল্লার এক মহিলা ব্যবসায়ী,গরীব হুসেন মহল্লার এক ট্রাক শ্রমিক ব্যবসায়ী,কালিকাপাড়া মহল্লার এক টমটম চালক ব্যবসায়ী ও শেখের মহল্লার মোটরসাইকেল দিয়ে যাত্রী বহনকারী সাজ্জাদ নামের এক ব্যবসায়ীকে নিয়ে পুরো উত্তর বানিয়াচংয়ের ১নং ও ২নং উত্তর পশ্চিম এড়িয়া মাদক সরবরাহ করে যুব-সমাজকে দিন-দিন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে পৌঁছিয়েছে এই মাদক(ইয়াবা) সিন্ডিকেটের গডফাদার ও সম্রাটগন।
আর ৩নং দক্ষিণ পূর্ব ও ৪নং দক্ষিণ পশ্চিম ইউনিয়ন গুলো এই গ্রেফতারকৃত কুখ্যাত মাদক(ইয়াবা)সম্রাট সালেক মিয়া ১০/১৫জন খুচরা ব্যবসায়ীর মাধ্যমে পরিচালনা করে আসছিলো।
এদিকে এসব তালিকাভুক্ত ব্যবসায়ীদের গ্রেফতারে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীসহ মাদকদ্রব্য অধিদপ্তর ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার ইউনিট এবং থানা পুলিশ মাঠে নামেন এবং তারা তাদের মতো অভিযান পরিচালনা করে গুটি কয়েকজন ব্যবসায়ী ও সেবনকারীকে মাদকসহ গ্রেফতার করে আদালতে মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করেন।
কিন্তু মাস খানেকের ভিতরে ঐ আবার তারা আদালত থেকে জামিনে বেরিয়ে এসে পুনঃরায় ব্যবসা পরিচালনা করে যাচ্ছে।
এসব তথ্যর ভিত্তিতে গোপন সংবাদের মাধ্যমে ২৮মে (বুধবার) বিকালে পুলিশ ৩নং দক্ষিণ পূর্ব ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন সিএনজি স্টেন্ড এলাকা থেকে বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে বিপুল পরিমান ইয়াবাসহ সালেক মিয়াকে আটক করে পুলিশ।
কিন্তু মামলায় তার কাছে(৪৫) পিস ইয়াবা উদ্ধার তথ্য উল্লেখ করে পলাতক একজনকে আসামী করে মামলা করা হয়।
২৯মে (বৃহস্পতিবার)সালেককে আদালতে প্রেরণ করা হয়।
উল্লেখ্য,২০২২ সালের ৪ আগষ্ট ওসি অজয় দেব এর নেতৃত্বে সেকেন্ড অফিসার(এসআই) অমিতাভ দাস তালুকদার,এসআই বাবুল,এএসআই সাদ্দাম,এএসআই তোহাসহ একদল পুলিশ গভীর রাতে সালেকের বাড়িতে অভিযান চালালে কুখ্যাত(ইয়াবা)ব্যবসায়ী সালেক পালিয়ে যায়।
এদিকে পুলিশ তার রোম থেকে (১১০০)পিছ ইয়াবা উদ্ধারসহ তার স্ত্রীকে গ্রেফতার করা হয়।
পরে থানায় (৪৯৬)পিছ ইয়াবা উদ্ধারের মামলা দিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছিলো।
এদিকে ৪দিন পর ৯আগষ্ট পুলিশের এই টিমটি বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে জনাব আলী ডিগ্রী কলেজের সামন থেকে(২৬৩)পিছ ইয়াবাসহ পলাতক মাদক ব্যবসায়ী সালেককে গ্রেফতার করা হয়।
পরদিন মাদক আইনে মামলা দিয়ে আদালতে প্রেরণ করেন থানা পুলিশ।
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জানান,পুলিশ সালেক মিয়াকে গ্রেফতার করার পর (১৫০)পিছ ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে এমনটা দেখিয়েছেন এবং ভিডিও করা হয়েছিলো তখন।
এছাড়াও সালেক পালিয়ে যাওয়া এক জনের নামও প্রকাশ করেছিলো তখন।
মাদকের এই ভয়াবহতায় যেমন দিন-দিন বাড়ছে নানান অপরাধ কর্মকান্ড। তেমনি অনেকের পরিবারে মাদকাসক্ত শিশু কিশোর থেকে শুরু করে নানান শ্রেনী পেশার সদস্যদের কারণে পরিবারে দেখা দিয়েছে অশান্তি।
এসব পরিবারের সদস্যরা মাদকে আসক্ত হয়ে পড়ায় পরিবার গুলোর সুনাম ক্ষুন্ন হচ্ছে।
তাই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সহযোগীতার পাশাপাশি নিজ,নিজ এলাকা থেকে সবাইকে মাদকের বিরুদ্ধে রুখে দা