২৮শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
১১ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
সকাল ৮:০২

জনপ্রিয় ৫ সংবাদ

আরো কিছু সংবাদ

কাজী নজরুলকে সরকারিভাবে ‘জাতীয় কবি’ স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি

কাজী নজরুল ইসলাম সব সময় মানুষের জয়গান গেয়েছেন। মানুষকে নিয়ে পথ চলেছেন বলেই তার গান, কবিতা, সাহিত্য আজও অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক।

তিনি শিখিয়ে গেছেন চির উন্নত শির হতে, মানুষকে ভালোবাসতে। তাই জাতীয় কবিকে সরকারি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে স্বীকৃতি দেওয়া উচিত বলে মনে করছেন কবি পরিবার এবং বিশিষ্ট জনেরা।

আজ বৃহস্পতিবার (২৭ আগস্ট) জাতীয় কবির ৪৪তম প্রয়াণ দিবসে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে তাকে স্মরণ করা হয়।

সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে জাতীয় কবির সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর তাকে নিয়ে কথা বলেন বিশিষ্ট জনেরা।

সেখানে জাতীয় কবিকে প্রজ্ঞাপন জারি করে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি জানান তারা।

সকালে কবির সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো শেষে আক্ষেপ করে নজরুল সঙ্গীত শিল্পী ফেরদৌস আরা বলেন, ‘কাজী নজরুল ইসলাম জাতীয় কবি, তা আমাদের মেধায় আছে, মননে আছে।

কিন্তু তা কোনো সরকারি গেজেটে নেই। অনেকের কথা থাকে, লিখিত রাখার কি দরকার আছে? আমরা তো জানিই যে তিনি জাতীয় কবি। সে কথাই যদি হতো, তাহলে কোথাও কোনো স্বীকৃতির প্রয়োজন হতো না। কোথাও কোনো কাগজে লিখতে হতো না। স্বাক্ষর-সিলের কোনো দরকার ছিল না। কাজী নজরুল ইসলাম জাতীয় কবি, সে হিসেবেই তার স্বীকৃতি হওয়া উচিত। স্বাধীনতার এত বছর পর আজ তার ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী, এতদিনেও আমরা তাকে স্বীকৃতি দিতে পারিনি। ’

একই কথা কবি পরিবারেরও। তাদের আশঙ্কা, গেজেট না হলে এক সময় নতুন প্রজন্ম হয়তো জানতেও পারবে না যে, কাজী নজরুল ইসলাম এ দেশের জাতীয় কবি।

এ বিষয়ে কবি পরিবারের পক্ষ থেকে কবির নাতনি খিলখিল কাজী বলেন, ‘সরকারিভাবে এটা (গেজেট) এখনো করা হয়নি। তিনি জাতীয় কবি, সরকারিভাবে গেজেট করা উচিত বলে আমিও মনে করি। যুগ যুগ পরে, হয়তো এমন একটা সময় আসবে যখন কেউ জানতে পারবে না যে, কাজী নজরুল ইসলাম এ দেশের জাতীয় কবি ছিলেন। সে পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের পরিবারের দাবি এটা করা হোক। ’

সকাল সাড়ে ৯টায় কবির সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক, পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এরপর তিনি বলেন, ‘কাজী নজরুল ইসলাম অসাম্প্রদায়িক চেতনার প্রতীক। আমাদের চেতনায় তিনি চির জাগরূক থাকবেন। তার অসাম্প্রদায়িক চেতনায় এ দেশ থেকে সাম্প্রদায়িকতার বিষ বৃক্ষের মূল উৎপাটন করবো বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। একইসঙ্গে নজরুলের চেতনায় সমৃদ্ধি ও সাম্যবাদী সমাজ বিনির্মাণ করবো। ’

সকাল ৭টায় কবির সমাধিতে ফুল দেওয়া হয় সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে। এসময় সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব বদরুল আরেফীন বলেন, ‘কাজী নজরুল ইসলাম শুধু বিদ্রোহী কবি ছিলেন না, তিনি ছিলেন শান্তি ও সম্প্রীতির কবি। নজরুলের কীর্তি ও রচনা চর্চার মাধ্যমে আমরা আমাদের সাহিত্য অঙ্গন আরও এগিয়ে নেবো। ’

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী কবির সমাধিতে ফুল দেওয়ার পর বলেন, ‘যখন গণতন্ত্রের কথা বলা হয়, তখন কবি কাজী নজরুল ইসলাম আমাদের উদ্বুদ্ধ করেন স্বেচ্ছায় নির্যাতন ভোগ করার। তিনি আমাদের জাতীয় জীবনের প্রতিটি ঘটনার সঙ্গে জড়িত। দুঃশাসনের এ যুগে তিনি আমাদের প্রতিটি ক্ষণ এমনভাবে আচ্ছন্ন করে রেখেছেন, এ দুঃসময় অতিক্রম করার জন্য, সংগ্রামে উদ্বুদ্ধ করার জন্য তিনি আমাদের পাশেই আছেন। তিনি আছেন বলেই এ নিপীড়নের মধ্যেও আমরা মিছিল করছি, সত্য উচ্চারণ করছি। তিনি আছেন বলেই আমরা গণতন্ত্রের পক্ষে লড়াই করছি। ’

শ্রদ্ধা নিবেদনের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামান বলেন, ‘ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিকাশে প্রেরণার এক অসাধারণ উৎস কাজী নজরুল ইসলাম। কঠিনতম সময়ে মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে নজরুলের গান ও কবিতা।

সকালে আরও বিভিন্ন সংগঠন কবির সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।