১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
বিকাল ৪:২২

জনপ্রিয় ৫ সংবাদ

আরো কিছু সংবাদ

বড়াব্দা ফকির বাড়ি দরবার শরীফের ইতিহাস

মোঃ ফারুক মিয়া: হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার মিরাশী ইউনিয়নের বড়াব্দা গ্রামের শাহ সৈয়দ মধু শাহ’র পুত্র পীরে তরিকত শাহ সৈয়দ সেলিম উদ্দিন। তিনি আল্লাহর প্রেমে জীবদ্দশায় বহুদিন যাবত পীরে তরিকত হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন।

আল্লাহর নৈকট্য লাভ করার জন্য  জীবনদশায় দেওয়ানা হয়ে মানুষের মাঝে তিনি ঘুরাফেরা করে  তরিকতের কাজ করে বিলিয়ে দিয়েছেন।

শাহ সৈয়দ সেলিম উদ্দিন সাহেবের জীবন নিয়ে কিছু কথা।

তিনি ভাল সাদা সরল মনের মানুষ হিসেবে সকলের কাছে একনামে পরিচিত। তাহাকে যাচাই-বাছাই করলে দেখতে পাওয়া যায়।

তিনি বলেন- মানুষকে ভালবাসলে আল্লাহকে পাওয়া যায়।

সেলিম শাহকে সারা দেশজুড়ে বিভিন্ন জায়গায় আনাচে কানাচে  দেখা যায়। একমাত্র আমল করিলে সেই কঠিন জগত পার পাওয়া যাবে।

সেলিম শাহর জন্ম ৭০ কি ৭২ ইংরেজী সনে বড়াব্দা কালা শাহ ফকির বাড়িতে।

শতশত ভক্ত আশেকান জাকেরান ভিড় জমায় এ দরবার শরীফে। সাধারন মানুষের মুখে সরেজমিনে যাহা শুনি ও দেখি, এ জগতে ভাল মনের মানুষ পাওয়া কঠিন বটে। নিজের চোখে দেখিলাম শাহ সৈয়দ সেলিম শাহ সকল মানুষের ধর্ম বর্ণের মাঝে তাহার চলাফেরা। তাহার মাঝে কোন দ্বিধাবোধ নেই। বাল্যকাল থেকেই আধ্যাত্মিকতার সাধকতায় মনোযোগী ছিলেন।

কালা শাহ, কলিম শাহ, ফেরাই শাহ, ছিদ্দিক শাহ, কালা পিরানী ওরফে আমেনা বিবি দরবার শরীফের মোতাওয়াল্লীর দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন পীরজাদা শাহ সৈয়দ সেলিম শাহ।

সেলিম শাহকে তাহার পিতা-মাতা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি জানান, পিতা মরহুম বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ মধু শাহ এবং মাতা জমিলা খাতুন।

শাহ সৈয়দ সেলিম শাহ যে বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন পূর্ব পুরুষ থেকে ঐ বাড়িটি বড়াব্দা কালাশাহ ফকির বাড়ি নামকরণ হিসেবে ছড়িয়ে পড়ে হযরত শাহ সৈয়দ কালা শাহ ফকির বাড়ি।

প্রায় ২ শত বছর পূর্বে ওই বাড়িটির নামকরণ হয়েছিল তা আমরা আজও বেশি বেশি করে কালাশাহ বসতবাড়িতে মিলাদ-মাহফিল দরুদ শরীফ সহ ওই দরবার শরীফে শত শত ভক্ত আশেকানরা দোয়া ও মোনাজাত করে শেষে যার যার কর্মস্থলে ফিরে যায়।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, হযরত শাহ সৈয়দ কালাশাহ ফকির এর অনেক কেরামতি ও আস্তানা সারা দেশজুড়ে বিভিন্ন জায়গায় তিনি রেখে গেছেন। ওই জায়গার নাম ছিল ত্রিপুরা রাজ্য।

ব্রিটিশের যখন শাসন ছাড়িয়ে যায় তখন নাম হয় পূর্ব পাকিস্তান। সেই সময় থেকেই এই বাড়িতে গান-বাজনা, চামা, মিলাদ মাহফিল হত। এই বাড়ির পূর্বে অনেক ইতিহাস সারা দেশজুড়ে বিখ্যাত হয়েছে। আগের সরকারের আমলেই এই বাড়ির কোন খাজনা নেওয়া হত না। খাজনা মাফ ছিল।

প্রশ্ন: কেন মাফ ছিল এ বাড়িতে? যাহা আমরা জানি অনেক পীর ফকিরের জন্ম হয় এ বাড়িতে। আগরতলা মহারাজা হযরত শাহ সৈয়দ কালা শাহ’র কেরামতি দেখে ১৬ গুণ জমি তাহাকে দান করেছিলেন।

কালাশাহ ফকির রাজার বাজারের নেরাতুংগের বিলে এসব জমি মানুষের মাঝে তিনি বিলিয়ে দিয়েছেন। সেটা আজও ইতিহাসে রেখে গেছেন স্মৃতি। সেই জায়গাটিতে তাহার ওইসব বংশের কামেল পুরুষ পীরজাদা শাহ সৈয়দ সেলিম উদ্দিন শাহ। শাহ সৈয়দ সেলিম উদ্দিন বর্তমানে যুক্তরাজ্য (লন্ডন) এ অবস্থান করছেন। সকল ভক্ত আশেকানদের নিকট দোয়া কামনা করেন শাহ সৈয়দ সেলিম উদ্দিন।

আগামী ১৩, ১৪ ও ১৫ জানুয়ারী ২০১৯ ইং রোজ রবিবার, সোমবার ও মঙ্গলবার হযরত নাসির উদ্দিন সিপাহসালার (রঃ) সহ ১২০ আউলিয়ার মাজার মুড়ারবন্দে শাহ সৈয়দ সেলিম উদ্দিন সাহেবের আসনীয় স্থানে পবিত্র বাৎসরিক ওরস মোবারক উপলক্ষে সকল ভক্তবৃন্দ, আশেকান, জাকেরানদেরকে দাওয়াত করা হইল।

হযরত নাসির উদ্দিন সিপাহসালার (রঃ) মাজারের উত্তর দিকে শাহ সৈয়দ সেলিম উদ্দিন সাহেবের আসনীয় স্থান।

( তথ্য সংগ্রহ: লেখক )