১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
সকাল ১০:৫৭

জনপ্রিয় ৫ সংবাদ

আরো কিছু সংবাদ

মাধবপুরে ইজিবাইক চালক হত্যা কান্ডে জড়িত স্থানীয় ‘কিশোর গ্যাংগ’

হবিগঞ্জের মাধবপুরে আলোচিত ইজিবাইক চালক ‘আওয়াল’ হত্যা কান্ডে জড়িত স্থানীয় ‘কিশোর গ্যাং’। ইজিবাইকের জন্য চালক আওয়াল কে নির্মম ভাবে খুন করে চা বাগানের নির্জন এলাকায় ফেলে আসা কিশোর গ্যাংগের ৩ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

রবিবার (২৯ মার্চ) তেলিয়াপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইন-চার্জ ইন্সপেক্টর গোলাম মোস্তফা এর নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল রাত ৩ টা থেকে ৫ টা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে মোঃ জুবায়েদ মিয়া (১৬), মোঃ মোশারফ মিয়া (১৭) ও মোঃ সজীব মিয়া (১৭) নামে তিন হত্যাকারীকে নিজ নিজ বাড়ি থেকে আটক করে।

আটককৃত মোঃ জুবায়ের মিয়া মাধবপুর উপজেলার বনগাঁও গ্রামের মৃত ফুরুক মিয়ার ছেলে। বর্তমানে সে একই উপজেলার সন্তুষপুর এলাকায় বসবাস করে। মোঃ মোশাররফ আলী মাধবপুর উপজেলার বেলঘর গ্রামের আদম আলীর ছেলে। মোঃ সজীব মিয়া একই এলাকার নাসির মিয়ার ছেলে।

আটককৃতরা হবিগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এর আদালতে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ নূরুল হুদা চৌধুরীর নিকট ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করে। জবানবন্দিতে হত্যাকাণ্ডের সাথে ৭ জন ও টমটম বেচাকেনার সাথে আরো ২ জন জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে।

একটি মোবাইল ফোনের সুত্র ধরে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে থানার পরির্দশক তদন্ত গোলাম দস্তগীর আহমেদ ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপজেলার বেলঘর ও সন্তোষপুর গ্রামে অভিযান চালিয়ে কিশোর গ্যাংগের এই তিন সদস্য কে গ্রেফতার করে। এ সময় মোবাইল ফোন, হত্যায় ব্যবহত ছুরা, ইজিবাইক গাড়ি উদ্বার করে।

তেলিয়াপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইন-চার্জ ইন্সপেক্টর গোলাম মোস্তফা জানান, “গত ১৭ মার্চ একটি ‘সংঘবদ্ধ ইজিবাইক চুর চক্র’ আব্দুল আউয়াল (২০) কে চা বাগানে বেধে রেখে তার ইজি-বাইকটি ছিনতাই করবে বলে পরিকল্পনা করে।”

আরো পড়ুনঃ
মাধবপুর গ্রামাঞ্চলে বাড়ছে করোনা সংক্রমনের ঝুঁকি
মাধবপুরে করোনা ভাইরাস রোধে সেনাবাহিনীর প্রচারাভিযান
মাধবপুরে সরকারি আদেশ অমান্য করায় ৫ দোকানে জরিমানা

“পরদিন ১৮ মার্চ তারা চা বাগানে ঘুরতে যাবে বলে ভাড়া করে আব্দুল আউয়ালকে নিয়ে যায়। চা বাগানের ভেতরে গিয়ে আব্দুল আউয়ালকে বেধে ফেলার পরে তারা বুঝতে পারে সে তাদের চিনে ফেলেছে। ফলে তারা তাকে হত্যা করে লাশ চা বাগানে ফেলে ইজি-বাইকটি নিয়ে যায়।” বলেন গোলাম মোস্তফা।

মিস্টার গোলাম মোস্তফা আরো বলেন, “হত্যাকারীরা তাঁর মোবাইল ফোনটি নিয়ে যায়। এই মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে হত্যাকারীদের সনাক্ত করে আটক করে। আটকের পর তারা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে এবং আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করে।”

মাধবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ ইকবাল হোসেন জানান, ঘটনার পরদিন পুলিশ উপজেলার চৌমুহনী এলাকা থেকে আওয়ালের ছিনতাই হওয়া ইজিবাইক উদ্ধার করে। হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত আরও ৪ জন এবং বেচাকেনার সাথে জড়িত ২ জনকে আটকের জন্য অভিযান অব্যাহত থাকবে।

পুলিশ সূত্র জানায়, এই এলাকায় একটি কিশোর অপরাধী চক্র গড়ে উঠেছে। ছিচকে চুরি দিয়ে শুরু করে এখন তারা কিলার। ইজিবাইক চালক আওয়াল হত্যাকান্ডে এই কিশোর গ্যাংটি চিহ্নত হয়েছে। সখের বসে মানুষের গাছের নারিকেল, পেপে চুরি দিয়ে তাদের শুরু। ৮ থেকে ১০ জন এই কিশোর গ্যাংটির সদস্য। আওয়াল কে খুন করে ইজিবাইক ছিনতাই করে তারা ফেসে গেছে।

সূত্র মতে, আওয়ালের ইজিবাইক বিক্রি করে তাদের ভাগে তিন হাজার টাকা পরে। এই টাকা নিয়ে ঘটনার পর পরই ঢাকা শহরে ঘুরতে যায়। খাওয়া দাওয়া ও আড্ডাবাজি করতে গড়ে উঠে এই কিশোর গ্যাং টি।

এ গ্রুপে সদস্যরা স্কুলের গন্ডি পার হয়নি। আওয়াল হত্যার ঘটনায় জড়িত তিন কিশোর গ্রেফতার হওয়ার পর কিশোর অপরাধীদের গ্যাং এর বিষয়টি পুলিশের সামনে আসে।