দীর্ঘদিন জামিন এবং পলাতক থাকার পর অবশেষে জেল হাজতে নারী ও শিশু নির্যাতন মামলার আসামী আলমগীর কবীর (৪০)। উচ্চ আদালত থেকে জামিনে থাকার পর জামিন আদেশ অতিবাহিত হওয়ায় নিম্ন আদালতের বিচারক মোঃ হালিম উল্ল্যাহ চৌধুরী তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করেন।
আলমগীর হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার বহরা ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের আহমদ আলীর ছেলে। সে উপজেলার দীঘিরপার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক । তার অমানবিক নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে ১ সন্তান রেখে প্রথম স্ত্রী তাকে তালাক দিয়ে চলে যায়।
২০১৪ সালে আলমগীর আবার বিয়ে করে শাহজাহানপুর ইউনিয়নের লোহাইদ গ্রামের আব্দুল করিমের মেয়ে খাদিজাতুল কুবরাকে। বর্তমানে তাদের দুটি ছেলে সন্তান রয়েছে। এমতাবস্থায় আলমগীর খাদিজাতুল কুবরাকে চাপ দিতে থাকে যে, বাপের বাড়ী থেকে যৌতুক বাবদ ৫লক্ষ টাকা এনে দেওয়ার জন্য। পরবর্তীতে খাদিজা পর্যায়ক্রমে ৬ লক্ষ টাকা এনে দেয়।
৬ লক্ষ এনে দেওয়ার পরও সে আবারও টাকা এনে দেওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকে। এতে খাদিজা অস্বীকার করলে নেমে আসে তার উপর অমানবিক শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন।
স্বামীর বির্যাতন সহ্য করতে না পেরে বাধ্য হয়ে খাদিজা বাবার বাড়ী চলে আসে। পরবর্তী বিভিন্ন সালিশের মাধ্যমে বিষয়টি নিস্পত্তি না হওয়ায় ২০২১ সালের খাদিজা নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল-৩ মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর কোর্টের নির্দেশে মাধবপুর থানা পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করে কোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করে।
পরবর্তীতে সুচতুর আমলগীর উচ্চ আদালত থেকে অন্তবর্তীকালীন ৬ সপ্তাহের জামিন নিয়ে আসে। গত ৩১ অক্টোবর জামিনের মেয়াদ শেষ হলে আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করে। এমতাবস্থায় ১ নভেম্বর নিম্ন আদালতে হাজির হলে বিচারক মোঃ হালিম উল্ল্যাহ চৌধুরী তাকে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন। মামলার আইনজীবি নরেশ চন্দ্র পাল বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আদালতে হাজির হওয়ার পর বিঞ্জ বিচারক তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করেন।
এবিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ আমিরুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আদালত কর্তৃক যদি শিক্ষক আলমগীর কবীর জেল হাজতে যান, তাহলে সরকারী বিধি মোতাবেক তাকে চাকুরী থেকে বরখাস্ত করা হবে।