নিজস্ব প্রতিনিধিঃ হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলায় অবস্থিত স্টার সিরামিক্স কোম্পানী এখন এডিস মশার আতুঘরে পরিণত হয়েছে। ইতোমধ্যে এই কোম্পানীর শ্রমিকসহ এলাকার প্রায় দেড় শতাধিক মানুষ ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়েছেন।
ফ্যাক্টরি থেকে ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ছে আশপাশের এলাকাতেও। কোম্পানী থেকে ডেঙ্গু আক্রান্তরা এখনও অনেকে ঢাকা, সিলেট ও হবিগঞ্জের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধিন রয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে সিরামিক্স কোম্পানী কর্তৃপক্ষের কাছে এলাকাবাসী বারবার অভিযোগ দিলেও কর্তৃপক্ষ কোম্পানীর ভেতর পরিস্কারের কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না। সেই সাথে তারা মানছে না জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের দেয়া নির্দেশনাও।
অনেকটা নিরুপায় হয়ে অবশেষে আন্দোলনে নামলেন এলাকাবাসী। আজ ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে স্টার সিরামিক্স কোম্পানীর সামনে এক বিশাল মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
সামাজিক সংগঠন দুর্গম সোস্যাল অর্গানাইজেশনের ব্যানারে কোম্পানীর শ্রমিকসহ কয়েক শাতাধিক এলাকাবাসী মানববন্ধনে অংশ নেন।
এ সময় বক্তারা বলেন- ‘স্টার সিরামিক্স ফ্যাক্টরির ভেতরে বিভিন্ন স্থানে জমে থাকা পানিতে এডিস মশার জন্ম হচ্ছে। এতে ওই কোম্পানীর শ্রমিকসহ এলাকার প্রায় দেড় শতাধিক মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে।
জানা যায়, মাধবপুর উপজেলার বাঘাসুরা ইউনিয়নের মাজার গেইটে ২৫ একর জায়গা নিয়ে স্থাপিত ‘স্টার সিরামিকস’ ফ্যাক্টরিতে প্রায় দুই হাজার শ্রমিক কাজ করেন।
গত ২৯ আগস্ট জেলাপর্যায়ের একটি স্বাস্থ্য টিম ‘স্টার সিরামিক্স’ ফ্যাক্টরি পরিদর্শন করে এডিস মশার লার্ভা পাওয়ার পর জরিমানা আদায় করেন।
একই সাথে দিনে দুইবার ফগিং, ব্যবহৃত পলিথিনের পকেটে জমাকৃত পানিনিষ্কাশনসহ বেশ কয়েকটি নির্দেশনা দেয়। কিন্তু কোম্পানীটি স্বাস্থ্য বিভাগের দেয়া কোন নিদের্শনা মানছে না।
এদিকে, ফ্যাক্টরিতে উৎপত্তি হওয়া এডিস মশা শুধু ফ্যাক্টরির ভেতরে সিমাবদ্ধ থাকছে না। এগুলো আশপাশের জনবসতি এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছে। ফলে ওই এলাকায় প্রতিদিন বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা।
এ ব্যাপারে সামাজিক সংগঠন ‘দূর্গম’র সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজান বলেন- ‘স্টার সিরামিক্স’ কোম্পানীতে বিভিন্ন স্থানে জমে থাকা পানিতে এডিস মশার জন্ম হচ্ছে।
প্রতিদিন এলাকার সাধারণ মানুষসহ শ্রমিকরা আকান্ত্র হচ্ছে। বারবার কর্তৃপক্ষের সাথে এ বিষয়ে আলোচনা করলেও কর্তৃপক্ষ কার্যকর কোন উদ্যোগ গ্রহণ করছেনা।’
নুরুল আমীন নামে এক ব্যক্তি বলেন- ‘হবিগঞ্জের একটি স্বাস্থ্য টিম স্টার সিরামিক্স ফ্যাক্টরি পরিদর্শন করে এডিস মশার লার্ভা পায়। পরে তাদের জরিমানা করে কিছু নির্দেশনা দিয়ে যায়। কিন্তু কর্তৃপক্ষ কোন নির্দেশনা মানছে না।’
এ ব্যাপারে হবিগঞ্জের সিভিল সার্জন একেএম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন- ‘এ পর্যন্ত হবিগঞ্জে ১৪৯ জন ডেঙ্গু রোগী সনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশই স্টার সিরামিক্স’র শ্রমিক।
আমরা গত ৯ সেপ্টেম্বর স্টার সিরামিকস ফ্যাক্টরির ভিতর পরিদর্শনে গিয়ে জমানো পানি এবং এডিশ মশার লার্ভা পাই। এ সময় জরিমানাসহ কিছু দিক নির্দেশনা দিয়ে আসি। যদি কর্তৃপক্ষ নির্দেশনা না মানে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
এ সকল বিষয়ে জানতে কোম্পানীর সহকারী ব্যবস্থাপক আব্দুল মালেক বেপারীর সাথে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।