১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
সকাল ১০:৫২

জনপ্রিয় ৫ সংবাদ

আরো কিছু সংবাদ

হবিগঞ্জে বিদ্যুতের ভেলকিবাজিতে বিপর্যস্ত জনজীবন

এক দিকে প্রচন্ড গরম অন্যদিকে লোডশেডিং! এ যেন হবিগঞ্জ শহরের নিত্যদিনের চিত্র। অতিরিক্ত লোডশেডিংয়ের ফলে জনজীবন অতিষ্ঠ। হবিগঞ্জের প্রতিটি মানুষের মুখে মুখে যেন বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)’র সেবা নিয়ে প্রশ্ন। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই।

অভিযোগের তালিকায় রয়েছে অতিরিক্ত লোডশেডিং, প্রতি শনিবারে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে রাখা, বিদ্যুৎ এর ভোল্টেজ কম, মাসিক অতিরিক্ত বিল, প্রিপেইড মিটারে অনিয়ম ইত্যাদি।

আর এইসব নিম্ন মানের সেবা দিয়ে যাচ্ছে বছরের পর বছর বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড হবিগঞ্জ।

আকাশে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে হবিগঞ্জে বিদ্যুৎ  নেই। সামান্য বৃষ্টি হচ্ছে; ঘণ্টার পর ঘণ্টা হবিগঞ্জ শহর অন্ধকার। এইভাবেই চলছে শহরের বিদ্যুৎ সেবা।

নেই কোন এর সঠিক সমাধান, নেই অভিযোগ করার মতো স্থান। এই বিষয়ে নীরব ভূমিকা পালন করছেন জেলা প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিগণ।
আর এইভাবেই অভ্যস্ত হয়ে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, হবিগঞ্জে কয়েকবছর আগেও এইরকম লোডশেডিং হতো না। এখন ব্যাপকভাবে লোডশেডিং হচ্ছে। এর পিছনে অন্যতম কারণ হল হবিগঞ্জে অতিরিক্ত শিল্পায়ন, শহরে অবৈধ টমটম ও অটোরিকশা বৃদ্ধি। আর প্রশাসন ও ব্যর্থ এদের বিরুদ্ধে সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণে।

এবিষয়ে বৃন্দাবন সরকারি কলেজ শিক্ষার্থী মাহমুদ হবিগঞ্জ নিউজকে বলেন, “করোনা ভাইরাসের কারণে পড়াশোনা, ক্লাস, প্রায় সব কাজ অনলাইন নির্ভরশীল কিন্তু লোডশেডিংয়ের কারণে কোনো কিছুই করার উপায় নেই।”

হবিগঞ্জ পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা সাকিবুর রহমান হবিগঞ্জ নিউজকে জানান, “গত কয়েক দিন যাবৎ ঘন্টায় বিরতিহীন ভাবে লোডশেডিং হচ্ছে। বিদ্যুৎ বিহীন গরমে মানুষ নাজেহাল। আর এইভাবে লোডশেডিংয়ের ফলে কোনো ইলেক্ট্রিক ডিভাইসই ঠিক থাকবে না।”

মুশাহিদ নামে একজন ব্যবসায়ী হবিগঞ্জ নিউজকে জানান, “বিদুৎ বিহীন চলা মুশকিল। বিশেষ করে আমরা যারা ব্যবসায়ী তাদের উপর প্রভাব টা বেশি পরে। ঠিক মত আমরা ব্যবসা করতে পারি না। বিদ্যুৎ এর উপর আমরা নির্ভরশীল।”

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ইমাম সাহেব হবিগঞ্জ নিউজকে জানান, “আজানের সময় ও বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে রাখে। তাদের জন্য মুসল্লিরা ঠিক মতো নামাজ আদায় করতে পারে না। আবার অতিরিক্ত লোডশেডিং এর কারণে মসজিদের এসিতেও সমস্যা হয়।”

হবিগঞ্জ জেলা সচেতন নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব ফরহাদ আহম্মেদ চৌধুরী হবিগঞ্জ নিউজকে বলেন, “মাত্রাতিরিক্ত লোডশেডিংয়ে হবিগঞ্জবাসীর জনজীবন দূর্বিষহ হয়ে পড়েছে, ঘন্টায় দুই,তিন বার বিদ্যুৎ আসা যাওয়া করে। তীব্র গরমে এই লকডাউনের মধ্যে আমরা অতিষ্ঠ৷ শীঘ্রই এই সুরাহা না হলে হবিগঞ্জবাসী রাস্তায় নামতে বাধ্য হবে।”

উল্লেখ্য, হবিগঞ্জে কয়েকটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র থাকা সত্ত্বেও হবিগঞ্জ শহরের মানুষ পুরোপুরি ভাবে বিদ্যুৎ পাচ্ছেন না।

যথেষ্ট পরিমাণের বিদ্যুৎ থাকা সত্ত্বেও কী কারণে এত লোডশেডিং আর নিম্ন মানের সেবা দিচ্ছে পিডিবি সেই প্রশ্ন হবিগঞ্জের আমজনতার?

বিদ্যুৎ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল মজিদ হবিগঞ্জ নিউজকে বলেন, “শাহজীবাজার বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৩৩ কেভি লাইনে সমস্যার জন্যে এই সমস্যা হচ্ছে। কেন্দ্রের কন্ট্রোল রুমের সার্কিট কখনো পুরে যায় তো কখনো জাম্পাট ছুটে যায়। আর এই কারণে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সংযোগ নিশ্চিত করতে আমরা আন্তরিক রয়েছি।”