৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
সকাল ১১:৫৭

জনপ্রিয় ৫ সংবাদ

আরো কিছু সংবাদ

হবিগঞ্জ পৌর কর্তৃপক্ষের নীরবতায় টমটমে ভাড়া তালিকা টানিয়ে সুকৌশলে নিচ্ছে ১০ টাকা: যাত্রীদের সাথে অশোভন আচরণ

মীর দুলালঃ হবিগঞ্জ শহরে দিন দিন বেরে চলেছে টমটম চালকদের যাত্রী দের সঙ্গে অশোভন আচরণ। নানা আলোচনা সমালোচনা আর একাধিকবার মৌখিক অভিযোগ জানানোর পরও ব্যাটারী চালিত অবৈধ টমটম মালিক ও চালকদের নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছে না হবিগঞ্জ পৌরসভা।

একদিকে যত্রতত্র পার্কিং ও আরেকদিকে আগের ৫ টাকা ভাড়া নিয়ে যাত্রীদের সাথে বাকবিতন্ডা, বিশেষ করে নারী যাত্রীদের সঙ্গে জোরজবরদস্তি ও খারাপ ব্যবহারের ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় এই টমটম যেনো মাথাব্যাথার কারণ হয়ে দাড়িয়েছে শহরবাসীর জন্য।

সম্প্রতি টমটমের ৫ টাকা ভাড়া নিয়ে সংবাদপত্র ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা হলেও আইন কানুনের তোয়াক্কাও করছে না টমটম চালক ও মালিকরা।

তারা তাদের মতো করে ১০ টাকা ভাড়াই নিচ্ছে। পুরুষ যাত্রীরা প্রতিবাদ করলে ৫ টাকা আর না করলে ১০ টাকা এবং কোনো কারণ ছাড়াই মহিলা যাত্রীদের কাছ থেকেই ১০ টাকা করে নিচ্ছে।

টমটম চালকরা কারণ হিসেবে বলছে, তারা তালিকা পেয়েছে, কিংবা তাদেরকে বলা হয়েছে ১০ টাকা করে নিতে।

তবে কে বলেছে, কারা বলেছে জানতে চাইলে তারা একবার বলে সংগঠন আরেকবার বলে মেয়র। তবে পৌরসভা কর্তৃক ভাড়ার তালিকা দেখতে চাইলেই বাঁধে বিপত্তি। তারা তালিকা দেখায় একটি সংগঠনের। যে তালিকায় ওই সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষর রয়েছে।

ওই তালিকায় মেয়রের স্বাক্ষর নেই কেন জানতে চাইলে বাকবিতন্ডা শুরু হয়? কোনো কোনো সময় বাকবিতন্ডা হাতাহাতিতেও গড়ায়। চালকদের একটাই কথা ভাড়া বেশি নিলে পৌরসভা কেনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। আমরাতো লুকিয়ে ১০ টাকা নেই না।

সরেজমিনে দেখা যায়, শহরের বাসা বাড়ির গৃহবধ‚ ও নারী যাত্রীরা ভাড়া নিয়ে কথা বললেই চরম বিব্রতকর অবস্থায় পড়ছেন।

হবিগঞ্জ পৌর মেয়রকে সাংবাদিকদের মাধ্যমে একাধিকবার অভিযোগ জানানো হলেও মেয়র বলছেন, যদি কেউ খুশি হয়ে ১০ টাকা দেয় তবে ভিন্নকথা, না হলে তিনি ব্যবস্থা নিবেন এবং ওই সংগঠনের লোকজনের সাথে কথা বলবেন।

কিন্তু তার আশ্বাসের প্রতিফলন ঘটেনি গত ৬ দিনেও। পৌরসভার পক্ষ থেকে কোনো বিবৃতি বা করা হয়নি মাইকিংও। আর এ জন্য মেয়রের নিরব থাকাকেই দায়ী করছেন ভুক্তভোগীরা।

সচেতন মহলের অভিমত, ১২শ টমটম ছাড়াও বৈধ অবৈধ মিলিয়ে প্রায় ৩-৪ হাজার টমটম চলাচল করছে শহরে।

একদিকে শহরের বৈধ অবৈধ টমটমগুলোর যানজটের সৃষ্টিকে যোগান দিচ্ছে বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে আসা অবৈধ টমটম। যা পৌরবাসীর নাগরিক জীবনকে চরম ভোগান্তিতে ফেলেছে।

জানা যায়, আগে পৌর এলাকার ভেতর সবখানে ভাড়া ছিল ৫ টাকা। তবে স্থানভেদে অর্থাৎ শহরে প্রবেশপথ পোদ্দার বাড়ি/২নং পুল থেকে চৌধুরী বাজার পর্যন্ত সরাসরি ১০ টাকা এবং চৌধুরী বাজার থেকে পৌর বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত ৫/১০ টাকা নেয়া হতো এবং মানবিক কারণে যাত্রীরাও উল্লেখিত স্থান পর্যন্ত ১০ টাকা ভাড়া দিতে আপত্তি করতেন না।

সম্প্রতি মহামারী করোনার সময় জাতীয়ভাবে গণপরিবহণে ৬০ শতাংশ ভাড়া বাড়ানো হলে হবিগঞ্জেও টমটমসহ অন্যান্য গণপরিবহণেও ভাড়ানো হয়।

গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে আগের ভাড়া বহাল রাখার সিদ্ধান্ত হলে হবিগঞ্জের সকল গণপরিবহণ আগের ভাড়ায় ফিরে যায়, তবে ফিরেনি বৈধ-অবৈধ টমটম মালিকরা।

উল্টো সম্প্রতি গজিয়ে উঠা হবিগঞ্জ টমটম মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ নামে একটি সংগঠন নিজেদের মনগড়া মতো তালিকা করে। তারা তাদের তালিকায় উল্লেখ করে শায়েস্তানগর (২নং পুল) থেকে চৌধুরী বাজার এবং চৌধুরী বাজার থেকে পৌর বাসটার্মিনাল ১০ টাকা, এবং চৌধুরীজার থেকে থানার মোড় পর্যন্ত ৫ টাকা। আর এটি করা হয়েছে অত্যন্ত সুকৌশলে।

ওই সংগঠনের এক নেতা নাম প্রকাশে অনিহা প্রকাশ করে বলেন, আমরা ২নং পুল থেকে চৌধুরী বাজার এবং বাজার থেকে পৌর বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত ১০ টাকা এবং পৌর এলাকার অন্যসব জায়গায় ৫ টাকার প্রস্তাব রাখা হয়েছিল।

মেয়র বলেছেন আলাপ আলোচনা করে সিদ্ধান্ত দেবেন। এ বিষয়ে মেয়র জানান, তিনি এখন পর্যন্ত কোন সিদ্ধান্ত দেননি।