হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্লা (পিপিএম), (বিপিএম) বলেছেন, “নারীদের সংসারে বিনা যুদ্ধে জয়লাভ করতে হবে। এক শ্রেণীর মানুষ আছে সারা দিন বাহিরে কাজ করে ঘরে এসে স্ত্রীর সঙ্গে প্রভাব বিস্তার করে। এতে সংসারে অশান্তির সৃষ্টি হয়। এতে করে নারী নির্যাতনের মত ঘটনা ঘটে।”
মোহাম্মদ উল্লা আরো বলেন, “একজন নারী হচ্ছে সন্তানদের শ্রেষ্ট শিক্ষক। মা সচেতন হলে তার ছেলে-মেয়েরা ভাল মানুষ হবে, শিক্ষিত হবে। তাই প্রত্যেক মা’র উচিত সন্ধ্যার পর ছেলে-মেয়ে যেন বাহিরে না থাকে সে দিকে খেয়াল রাখা। সকাল বেলা সন্তানদের ঘুম থেকে উঠানো ধর্মকর্ম শিখানো। অনেক মায়ের এমন সন্তানও আছে, যারা স্কুলের নাম করে দোকানে গিয়ে আড্ডা মারে, বিভিন্ন জিনিস ক্রয় করে। এবং খারাপ ছেলেমেয়েদের সঙ্গে মিশে বিপদগামী হচ্ছে।”
তিনি আরো বলেন, “এক শ্রেণীর মা আছেন যারা তার উঠতি বয়সের ছেলে-মেয়েদের হাতে দামী মোবাইল ফোন তোলে দিচ্ছে। এতে করে উঠতি বয়সের ছেলে-মেয়েরা মোবাইল ফোনে আকৃষ্ট হচ্ছে। মোবাইল ও ইন্টারনেটের কুফলে সামাজিক অবক্ষয়ে নিজের ভবিষ্যৎ নষ্ট করছে। এ দিকে সকল মায়েদের খেয়াল রাখা প্রয়োজন।”
তিনি বুধবার (১৯ শে ফেব্রুয়ারী) দুপুরে হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার নোয়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের মাঠ প্রাঙ্গনে হবিগঞ্জ পুলিশ, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা আশা ও নোয়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের যৌথ উদ্দোগে আয়োজিত সন্ত্রাস, নারী নির্যাতন রোধ, আদর্শ সন্তান গঠনে এক বিশাল মা সমাবেশে এসব কথা বলেন।
নোয়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের জননন্দিত চেয়ারম্যান ও সমাজ সেবক সৈয়দ মোঃ জাবেদ এর সভাপতিত্বে প্রথমে কুরআন তিলাওয়াত করেন নোয়াপাড়া চা বাগানের ৫নং টিলায়র হযরত শাহ নেওয়াজ মজনু শাহ (রঃ) মাজারে খাদেম মৌলানা আব্দুল করিম কবিরাজ।
মা সমাবেশে অন্যন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন চুনারুঘাট-মাধবপুর থানার সার্কেল সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার নাজিম উদ্দিন, মাধবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ ইকবাল হোসেন, আশার ডিভিশনাল ম্যানেজার সাজিদুল ইসলাম চৌধুরী, ডিস্ট্রিক ম্যানেজার কামাল হোসেন, নোয়াপাড়া ইউ/পি’র সংরক্ষিত মহিলা সদস্য শ্যামলী রাণী দেব, শাফিয়া বেগম, হারিজ উদ্দিন লালু মেম্বার, নুরুল হাসান তপু মেম্বার, রুবেল মিয়া মেম্বার, বকুল মেম্বার, শহীদ মিয়া মেম্বার, প্রধান শিক্ষক নুরজাহান আক্তার, হবিগঞ্জ জেলা টিভি জার্নালিষ্ট এসোসিয়েশন সাধারণ সম্পাদক ও এশিয়ান টেলিভিশন জেলা প্রতিনিধি এস এম সুরুজ আলী, মাধবপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি রুকন উদ্দিন লস্কর, সাংবাদিক আবু নাছের জামাল, শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা অনলাইন প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আখলাক উদ্দিন মনসুর প্রমুখ।
পুলিশ সুপার আরো বলেন, “হবিগঞ্জ জেলায় একটি বৈচিত্রময় ভূমি প্রকৃতি রয়েছে। এখনকার মানুষ সহজ, সরল ও আবেগ প্রবণ। এই আবেগকে ভাল কাজে লাগাতে হবে। এক সময় এই জেলা দাঙ্গা হাঙ্গামা প্রবণ এলাকা ছিল। দাঙ্গা ও ঝগড়ার কারণে বহু মামলা ছিল। গত ১ বছরে পুলিশের মটিভেশন ও বিট পুলিশিং এর মাধ্যমে ৬৭১ টি মামলা নিষ্পত্তি করা হয়েছে। কিন্তু নারী নির্যাতন মামলা এখনো কমছে না। এ ব্যাপারে সচেতনতা বৃদ্ধিতে পুলিশ কাজ করছে।”