সদ্য গঠিত হবিগঞ্জ জেলার জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমন্বয় কমিটিতে আওয়ামী লীগ নেতাদের বিশেষভাবে প্রাধান্য দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে বঞ্চিত হয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে এনসিপিতে যোগ দেওয়া কর্মীরা।
দীর্ঘ ৮/৯ মাস ধরে পরিশ্রম করেছেন এনসিপির জন্য, এমন অনেকের নতুন এই কমিটিতে স্থান হয়নি বলে জানিয়েছেন তারা।
কমিটি নিয়ে জেলার রাজনৈতিক অঙ্গণসহ বিভিন্ন পেশার লোকজন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা মন্তব্য করছেন।
এসব থেকে জানা গেছে, নাহিদ উদ্দিন তারেকের মনোনীত সদস্য দ্বারা এ কমিটি ঘোষণা দেয়া হয়। কমিটিতে সদস্য করা হয় আওয়ামী লীগের সময়ে সুবিধাভোগী জাসদ সেক্রেটারি আবু হেনা মোস্তফা কামালকে। কমিটির আরেক সদস্য মীর দুলালকে কিছু দিন আগে ৫০ বোতল ভারতীয় ফেনসিডিলসহ পুলিশ আটক করেছিল। সংংবাদটি বিভিন্ন গণমাধ্যমেও প্রকাশ পেয়েছে।
আরেক সদস্য লাখাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি কামাল আহমেদ। তিনি ২০১৬ সালের উপজেলার ৫ নম্বর করাব ইউপি নৌকার প্রার্থী ছিলেন।
গণঅধিকার পরিষদ থেকে বহিঃষ্কৃত নেতা মাহবুবুল বারী চৌধুরী মুবিনকে করা হয়েছে যুগ্ম সমন্বয়কারী।
সদস্য করা হয়েছে আ খ ম উস্তারকে, যিনি ছিলেন হবিগঞ্জের আওয়ামীলীগের সাবেক এমপি আবু জাহিরের ঘনিষ্ঠ লোক। সব সময় সভা-সেমিনারে আবু জাহিরের সঙ্গে তাকে দেখা যেতো।
আরেক সদস্য হবিগঞ্জ জেলা যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা সেক্রেটারি নাসির উদ্দিন। তিনি ‘মদের পাট্টা নাসির’ নামে পরিচিত।
চুনারুঘাট সদর ইউনিয়নের নৌকা প্রতীকে নির্বাচিত আওয়ামী লীগ নেতা বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান মাহবুবর রহমান চৌধুরী নোমানকে কমিটির সদস্য করা হয়েছে। আরও সদস্য করা হয় চুনারুঘাট উপজেলার ৩ নম্বর দেওরগাছ ইউপি যুবলীগ নেতা এবং ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ফজুলল করিমকে (ফজল কারী)।
কমিটিতে আওয়ামী লীগের এমন পুনর্বাসনের চিত্র ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। এনসিপিকে এমনভাবে ঢেলে সাজাবেন, যেখানে থাকবে নৈতিক আদর্শে উজ্জীবীত রাজনৈতিক সচেতন বিশেষ ব্যক্তিবর্গ— এমন প্রত্যাশা ছিল অনেকের।
আওয়ামী নেতায় ভরপুর এমন কমিটি কীভাবে যাচাই-বাছাই ছাড়া উত্তরা অঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম ও সদস্য সচিব আখতার হোসেন স্বাক্ষরে অনুমোদিত হয়- এমন প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। এই কমিটি করার পেছনে অর্থনৈতিক লেনদেন আছে কি না সেই প্রশ্নও দেখা দিয়েছে।